পাটের গৌরব ফেরাতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে: পাটমন্ত্রী
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:২০
।। স্পেশাল করেসপেন্ডন্ট।।
ঢাকা: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) বলেছেন, ‘সোনালি পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পাট চাষের জমির পরিমাণ বৃদ্ধি, কৃষক কর্তৃক উৎপাদিত পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত এবং দেশ-বিদেশে পাটের বাজার সম্প্রসারণ করার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) লক্ষীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের তারকা চিহ্নিত ৭৪ নং প্রশ্নের জবাবে পাটমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন ও সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চফলনশীল পাট ও পাটবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘পণ্য পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন অনুযায়ী সরকার ১১টি পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। পণ্যগুলো হলো হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল ধনিয়া, আলু, ময়দা, আটা, তোষ, খুদ ও কুরা। এ ছাড়া পোল্ট্রি ও ফিস ফিড মোড়কীকরণে পাটজাত মোড়কের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও জানান, উল্লিখিত আইন অনুযায়ী সরকার পদক্ষেপ নেওয়ায় দেশে প্রতিবছর অন্তত ১৫০ কোটি পাটের বস্তার চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। এর বাইরে পাটের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকার বিনামূল্যে যে বই বিতরণ করে সেগুলোও যেন পাটের তৈরি ব্যাগের মাধ্যমে বিতরণ করা হয় তার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। দাফতরিক কাজে বহুমুখী পাটের পণ্য ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠ প্রশাসনের সকল শীর্ষকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘জুট জিও টেক্স’ ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বাংলাদেশ রেলওয়ে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এবং বিএডিসির সকল কাজে পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম ১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আছলাম হোসেন সওদাগরের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী দস্তগীর গাজী সংসদে জানান, বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পটি দেশের ৪৬ টি জেলার ২৩০ টি উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারীসহ প্রত্যেক উপজেলায় প্রকল্প মেয়াদকালীন প্রতিবছর পাটবীজ উৎপাদনের জন্য নির্বাচিত ১০০ জন এবং পাট উৎপাদনের জন্য নির্বাচিত ৩০০ জন্য পাটচাষিকে পাট চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘স্টার জুটমিলস লিমিটেডসহ সরকার নিয়ন্ত্রাণাধীন জুট মিলগুলোকে আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।’
তিনি সংসদে জানান, সরকার নিয়ন্ত্রাণাধীন স্টার জুট মিলস লিমিটেডসহ ২২টি মিল সহজ শর্তে বৈদেশিক ঋণগ্রহণের মাধ্যমে বিএমআরআই প্রকল্পের আওতায় আধুনিকায়নের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এছাড়া ২২টি মিল বিএমআরকরণের জন্য বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন এবং চীনের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে