Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিশুদের ৩২ শতাংশই সহিংসতার ঝুঁকিতে


৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:৩৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিশুদের ৩২ শতাংশই ডিজিটাল সহিংসতা, ভয় দেখানো ও পীড়নের শিকার মতো ঝুঁকিতে রয়েছে। যাদের বয়স ১০ থেকে ১৭ বছর।  মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ‘নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস’ উপলক্ষে  ইউনিসেফ বাংলাদেশ পরিচালিত ‘বাংলাদেশে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১ হাজার ২৮১ জন‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিশুর ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে ইউনিসেফ বাংলাদেশ।

বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধের মধ্যে ধর্মীয় উসকানি দেওয়ার বিষয়টিও সমীক্ষায় উঠে এসেছে।  জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১০ শতাংশ শিশু ধর্মীয় উসকানিমূলক বিষয়বস্তুর মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ করে।  কিশোর বয়সীরা (১৬ থেকে ১৭ বছর) অন্য বয়সী শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি এই ধরনের উসকানিমূলক বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হয়।

সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ২৫ শতাংশ শিশু (১০-১৭ বছর বয়সী) ১১ বছর বয়সের আগেই ডিজিটাল জগতে প্রবেশ করতে শুরু করে।  এ ছাড়া, শিশুদের একটি বড় অংশ ( ৬৩ শতাংশ) প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্থান হিসেবে তাদের নিজেদের কক্ষটিকেই ব্যবহার করে, যা ‘বেডরুম কালচার’-এর ব্যাপকতা নির্দেশ করে। এটি অপেক্ষাকৃত কম নজরদারির মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে।

সমীক্ষা থেকে আরও জানা যায়, বাংলাদেশে উচ্চমাত্রায় অনলাইনে প্রবেশাধিকারে সুযোগ ও ব্যবহারের দিক থেকে ছেলেরা ( ৬৩ শতাংশ) মেয়েদের (৪৮ শতাংশ) চেয়ে এগিয়ে আছে।  ইন্টারনেটে এসব শিশু নিয়মিতভাবে অনলাইন চ্যাটিং ও ভিডিও দেখার কাজটি সবচেয়ে বেশি করে।  নিয়মিত সবচেয়ে বেশি যে দুটি কাজ করা হয়, তা হচ্ছে, অনলাইন চ্যাটিং (বার্তা আদান-প্রদান) ও ভিডি দেখা।  প্রতিদিন গড়ে ৩৩ শতাংশ সময় অনলাইন চ্যাটিং এবং ৩০ শতাংশ সময় ভিডিও দেখা হয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

৭০ শতাংশ ছেলে ও ৪৪ শতাংশ মেয়ে অনলাইনে অপরিচিত মানুষের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করে উল্লেখ করে সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অংশগ্রহণকারীদের একটি অংশ তাদের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলে সেই অনলাইন ‘বন্ধুদের’ সঙ্গে সরাসরি দেখা করার কথাও স্বীকার করে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীর কথা আমরা শুনেছি এবং তারা যা বলছে তা পরিষ্কার—ইন্টারনেট একটি নির্দয় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।  এজন্য নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসে ইউনিসেফ তরুণ জনগোষ্ঠীর নেতৃত্ব অনুসরণ করছে। একইসঙ্গে অনলাইনে তাদের প্রতি সদয় হওয়ার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। ’

ইউনিসেফ জানায়, বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ছে।  অনলাইনে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে।  কারণ এটা দ্রুত অনেকের কাছে পৌঁছে যেতে পারে এবং অনলাইনে অনির্দিষ্টকাল ধরে এগুলো থেকে যেতে পারে।  অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় যারা অনলাইনে ভয়ভীতির শিকার হয়, তাদের অ্যালকোহল ও মাদকে আসক্ত হওয়ার এবং স্কুল ফাঁকি দেওয়ার হার বেশি।  এছাড়া তাদের পরীক্ষায় ফল খারাপ করা, আত্ম-সম্মান কমে যাওয়া ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে।  তাদের আত্মহত্যার দিকেও ঠেলে দিতে পারে।

সারাবাংলা/জেএ/এমএনএইচ

ইন্টারনেট শিশু সহিংসতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর