Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শুধু নিজের কোলে ঝোল টানার কাজ করি না: প্রধানমন্ত্রী


৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২০:৩০

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হই তখন কিন্তু সমগ্র বাংলাদেশের সকল জনগণের জন্যই আমার কাজ। শুধু নিজের কোলে ঝোল টানার কাজ করি না। শুধু নিজের এলাকা নয়, সার্বিকভাবে সমগ্র বাংলাদেশের সুষম উন্নয়নে বিশ্বাসী।’

বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোন একটা দেশের উন্নয়নের জন্য একটা সুষ্ঠু পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়। কোথাও কোন কাজটা করলে অধিক সংখ্যক মানুষ উপকারভোগী হবে, সুযোগ পাবে। সেইদিকে চিন্তা করেই আমি কাজ করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পায়নটা আমাদের প্রয়োজন কিন্তু সবসময় আমাদের মাথায় রাখতে হবে, আমার দেশে ফসল উৎপাদনের জমির যেন কোনমতে ক্ষতি না হয়, সে ব্যবস্থাটা আমরা করছি।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আমার শহর আমার গ্রাম’ নির্বাচনি স্লোগানের অঙ্গীকার কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন সে বিষয়ে চট্টগ্রাম-৩ আসনের সদস্য মাহফুজুর রহমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘আামদের লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন। আর উন্নয়নটা শুধু শহরভিত্তিক বা রাজধানীভিত্তিক নয়। এই উন্নয়নটা হবে সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী। এখানে তৃণমূলের মানুষ যেন এই সুযোগটা পায়। জীবনমান উন্নত হয়। আমরা শহরবাসী যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা লাভ করি, সেই সুযোগ সুবিধাগুলি আমরা গ্রামের জনগণের কাছে নিয়ে যাবো। অর্থাৎ, যেমন বিদ্যুৎ আমরা ঘরে ঘরে পৌঁছাবোই, ইতোমধ্যে আমরা পৌঁছাতে শুরু করেছি। ৯৩ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছে।’ বিদ্যুতের সাথে গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নত করতে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটনানোর জন্য আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে যাচ্ছি বলেও যোগ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যেকটি গ্রামে একটা পরিকল্পিতভাবে বাসস্থান হবে। প্রত্যেকটা বাসস্থান হবে উন্নত মানের। যাতে প্রতিটি মানুষ গৃহ পায়, কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না বলেও সংসদকে অবহিত করেন শেখ হাসিনা।

যাদের একেবারে জমি নেই বা নিঃস্ব-রিক্ত তাদেরকে বিনা পয়সায় ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্তত তাদেরকেও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। পয়ঃনিষ্কাশন ও স্যানিট্যারি ল্যাট্রিন থেকে শুরু করে আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। হয়তো সেটা খুব আন্তর্জাতিক বা ফাইভ স্টার হোটেলের মতো হবে না। কিন্তু মানসম্মত হবে, স্বাস্থ্যসম্মত হবে। সেই ধরনের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি।’

‘সারাদেশেই কিন্তু ইন্টারনেট সার্ভিস চলে যাচ্ছে। আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি। ইতোমধ্যেই প্রতিটি ইউনিয়নেই আমাাদের ডিজিটাল সেন্টার আছে। তাছাড়া বঙ্গবন্ধ স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি, যার মাধ্যমে এই প্রযুক্তি নির্ভর যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি’- বলেন শেখ হাসিনা।

গ্রাম উন্নয়নের সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমমন্ত্রী আরও জানান, ‘একটা মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করার সব ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা চাই প্রত্যেকটি গ্রামকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে।যেন গ্রামের মানুষ গ্রামে বসেই সব ধরনের নাগরিক সুবিধা পেতে পারে, যাতে তারা একটা উন্নত জীবন পেতে পারে। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।’

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলটা সম্পূর্ণভাবে অবহেলিত ছিল। আমি আসার পর থেকে ওই অঞ্চলের ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছি।’ এ ছাড়া বরিশাল থেকে পায়রা পর্যন্ত রেললাইন করার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে একটা পরিকল্পনা নিয়ে চুক্তিও সই হয়েছে এবং এটার সম্ভাব্যতা যাচাই হচ্ছে। সম্ভবত শেষে আমরা বলতে পারবো যে, রেললাইনটা কোথা থেকে কীভাবে যাবে, কোন অ্যাল্যাইনমেন্টে যাবে। যেহেতু সমীক্ষা চলছে। আর এখানে অসংখ্য নদী-নালা, খাল-বিল। মাটিও খুব নরম। কাজেই সেদিক থেকে সমীক্ষার পরেই বলতে পারবো, কতদূর রেল নেওয়া যেতে পারে। তবে যোগাযোগের ব্যবস্থা আমরা যথেষ্ট করে দিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

জাতীয় সংসদের সাবেক চিপ হুইপ সরকার দলীয় সদস্য আ স ম ফিরোজের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘আগেই বলেছি যে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এই সম্ভাব্যতা যাচাই হওয়ার পরেই এখানে রেললাইনটা হবে। তাই আমি মাননীয় সংসদ সদস্যকে একটু সাবধান করতে চাই। ছোটবেলায় আমরা ছড়া পড়তাম, ‘রেলগাড়ি ঝমাঝম পা পিছলে আলুর দম’। তো এই রেলগাড়ি রেলগাড়ি করেন, আবার সেই ঝমাঝমে পা পিছলে না যায়, সাবধান থাকবেন।’

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর