Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বদলীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব


৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:১৯

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে প্রস্তাব গ্রহণ ও একটি সর্বদলীয় কমিটি গঠন করে প্রয়োজনে ভারত, চিন, মিয়ানমার ও জাতিসংঘ সফর করে প্রতিবেদন তৈরি করে সংসদে পেশ করার আহবান জানিয়েছেন সিনিয়র সংসদ সদস্যরা।

বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে রোহিঙ্গা বিষয়ক আলোচনায় সর্বদলীয় কমিটি গঠনের আহবান করেন সিনিয়র সংসদ সদস্যরা।

তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মো. নাসিম, ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি।

আলোচনায় তারা বলেন, ‘এটি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। এই সমস্যা সমাধান দ্বিপাক্ষিকভাবে হবে না, জাতিসংঘসহ ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ প্রয়োজন।’ তারা আরও বলেন, ‘আর কতদিন আমরা এই বোঝা বহন করবো। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল তা যথাযথ ছিল কি-না তা খতিয়ে দেখা দরকার। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে নতুন সংসদের নতুন সরকারের অবস্থান কী তা দেশবাসী ও বিশ্বকে জানানো উচিত।’

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাবিব মিয়া বৈঠকে সভাপতিত্ব করছিলেন। মাগরিবের বিরতির পর প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যারা রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন।

মো. নাসিম বলেন, ‘আজকে একটি পত্রিকায় হেডলাইন আছে, বিশ্বের সব রোহিঙ্গা বাংলাদেশকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করছে। মিয়াননের পর এখন ভারত ও সৌদি আরব থেকেও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে। আজকে একটি জাতীয় দৈনিকে আছে, রোহিঙ্গাদের নাগরিত্ব দিয়ে সম্মানের সাথে ফিরিয়ে নিতে হবে বলেছেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। আমি শুধু বলতে চাই, ইউরোপে শরনার্থী নিতে ধনী দেশগুলো ভয় পেয়েছিল, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি স্বল্পোন্নত দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েও মায়ের মমতা নিয়ে ২০১৬ সালে এইসব রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। এখন ১১ লাখ রোহিঙ্গা আছে এই বাংলাদেশে। এই জন্য তিনি মাদার অব হিউমিনিটি হয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

‘আমি বলতে চাই, এই ব্যাপারে যেহেতু সংসদ চলছে , রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের পরে একটি দিন নির্ধারণ করুন, যেখানে আমরা সব দল মিলে এখানে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আমাদের করণীয় কী, সরকারের পদক্ষেপগুলো কী, আলোচনা করা দরকার। মিয়ানমারের অনীহার কারণে মাত্র ৩ জন ফেরত গেছে। তাই অনুরোধ করবো, এই ব্যাপারে একটি বিশেষ আলোচনার ব্যবস্থা করা হোক। আপনি সুযোগ দেন, আমরা সব দল আছি, সরকারি-বিরোধী দল আছি। আমরা আলোচনা করে মতামত দেই। প্রয়োজনে সংসদীয় কমিটি গঠন করে সব দল থেকে প্রতিনিধি নিয়ে ভারত, চীন ও মিয়ানমারে গিয়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। এভাবে চলতে পারে না।’

মো. নাসিমের প্রস্তাব সমর্থন করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি আমরা মিয়ানমানের সঙ্গে করেছিলাম অত্যাবশ্যকীয় ব্যাপারে এই বিষয়টি কতখানি যথাযথ ছিল তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করি। আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে সেখানে একটি শর্ত অর্থাৎ স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন করলে পরেই তারা ফিরে যাবেন। এই স্বেচ্ছা শব্দটি যখনই যুক্ত করা হয়েছে তখনই সেটি বাংলাদেশের পক্ষে ছিল না বলে আমি মনে করি। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে দোষ দিচ্ছি না। কিন্তু আমি এইটুকু বলতে চাই, আন্তর্জাতি বন্ধুরা যে পরামর্শ দিয়ে মনে করেছেন তারা এই সমস্যার সমাধান করবেন তারা তাদের রাজনীতি করেছেন আমাদের রাজনীতি করেননি। এই সমস্যা চলতে পারেনা। মায়ানমার ফিলিস্থিতের মতো হতে পারে না।’

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘একাদশ সংসদ যাত্রা শুরু করেছে। জনগনের প্রতিনিধিরা আজকে যারা সংসদে বসে আছেন, বিশ্ববাসীর কাছে বলা দরকার যে, রোহিঙ্গা বিষয়টা আমরা কীভাবে দেখছি। সেজন্য আমি মনে করি মো. নাসিমের যে প্রস্তাবটা একটা দিন ধার্য করুন, জনপ্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কী দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করেন তা দেশবাসীকে জানানো উচিত এবং বিশ্ববাসীকে জানানো উচিত। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের প্রতিও একটি দিক নির্দেশনা, একটা প্রস্তাব এখানে পাস করা হোক।’

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাবটি সমর্থন করে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, আমি মনে করি চট্টগ্রামের অবস্থা ভয়াবহ। কক্সবাজার সমস্যার মধ্যে আছে। এই সমস্যায় না থাকার জন্য সর্বদলীয় কমিটি করার প্রস্তাব করছি।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই

রোহিঙ্গা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর