বিএসএমএমইউতে প্রথমবারের মতো বিদেশি রোগির সফল কিডনি প্রতিস্থাপন
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:৪০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: প্রথমবারের মতো দেশে একজন বিদেশি রোগীর সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকরা। গত ৫ জানুয়ারি মালয়েশিয়ান নাগরিক রোজ লায়লার কিডনি প্রতিস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসকরা।
দীর্ঘ তিনমাস বিএসএমএমইউ-এর নেফ্রোলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন থেকে আজ বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন। আজ রাতেই দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন রোজ, তার বোন রুহানি ও রোজের স্বামী সালাউদ্দিন।
সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক পরিচিতের মাধ্যমে চাঁদপুরের ছেলে সালাউদ্দিন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’
অপারেশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি খুব ভালো, সফল এবং দারুণ একটি অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য। রোগীও খুব ভালো রেসপন্স করেছে আমাদের চিকিৎসাতে।’
অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়াতে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয় আমাদেরও পরে। সেখানেও রোজ লায়লা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু রোজের সিরিয়াল আসবে আগামী তিনবছর পরে। তাই রোজের স্বামী বাংলাদেশি সালাউদ্দিন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সবকিছু জেনে কাগজপত্র দেখে রোজকে নিয়ে ঢাকায় আসতে বলি। এরপর গত বছরের নভেম্বরে তারা আসে, তখনই ভর্তি করা হয় এই হাসপাতালে। তখন একমাসের মতো দরকার হয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে। এরপর গত ৫ জানুয়ারি আমরা রোজের কিডনি প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হই। রোজকে কিডনি দিতে ঢাকায় আসে তার বোন রুহানি।’
‘মেয়েটা আসার সময় একেবারেই জটিল অবস্থায় ছিল, কিন্তু তিনদিনের মাথায় তার বেশিরভাগ সমস্যাই ভালোর দিকে যেতে থাকে-এত ভালো রেসপন্স করেছে সে-আমরা নিজেরাই অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের জন্যও এটা এক দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল’—বলেন তিনি।
আজ ৭ ফেব্রুয়ারি তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হলো প্রশ্ন করলে ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা আরও এক সপ্তাহ আগেই তাকে রিলিজ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রোগীপক্ষের আবেদন এবং অনুরোধের প্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ বেশি রাখা হয় হাসপাতালে। তাদেরকে আজ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে এবং তারা আজ রাতেই মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।’
রোজের ওষুধপত্রের বিষয়টি দেখেছেন নেফ্রোলজি বিভাগের চেয়ারম্যন অধ্যাপক ডা. আছিয়া খানম, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, অধ্যাপক ডা. শহীদুল ইসলাম সেলিমসহ অন্যরা। আর প্রতিস্থাপনের কাজটি করেছেন ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল ইসলাম দীপুসহ বেশ কয়েকজন চিকিংসক।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক চিকিৎসক ডা. এরশাদ, ডা. রোমিন রাফি, ডা. সাইফুল, ডা. জাকিরসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসক এ সফল প্রতিস্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে জানান অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান।
সারাবাংলা/জেএ/এমআই