Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং নীতিমালা: ভাগ বসাতে চায় সিভিল অ্যাভিয়েশন


১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ২২:৪৩

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিমানবন্দরে সেবার মান বাড়াতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংকে নীতিমালায় রূপান্তর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এতে করে বিমান এয়ারলাইন্স বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে অভিযোগ করেছেন বিমান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বাংলাদেশ সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটি খসড়া নীতিমালাটি গত নভেম্বর মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাস হলে আবার সিভিল অ্যাভিয়েশনে পাঠানো হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং নীতিমালার ফলে বিমান এয়ারলাইন্সের আয় কমে যাবে। যে আয় দিয়ে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা হয়। কিন্তু সিভিল অ্যাভিয়েশন গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের আয়ে ভাগ বসাতে চায়। এটা নিয়ে এরই মধ্যে বিমানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে যাচ্ছেন। যেন গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সার্ভিসটা বিমানই দিতে পারে।’

তিনি জানান, সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরের শৃঙ্খলা ফেরাতে কোন নজর দিচ্ছে না। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১৩০টি ফ্লাইট ওঠা-নামা করে। ঘন কুয়াশা ও বিমানবন্দরের মেরামতের কাজের কারণে দেখা যায়, বেশিরভাগ ফ্লাইট সকাল ১১টা থেকে নামতে শুরু করে। এতে পুরো বিমানবন্দরে মাছের বাজারের মতো হয়ে যায়। এক সঙ্গে অনেক লোকের লাগেজ সামলাতে বিমান কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়। সময় বেশি লাগার কারণে লোকজনও বিরক্ত হয়।

সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ কী করলে এ সমস্যা থাকবে না, জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরেক কর্মকর্তা বলেন, একই সাথে স্লট বরাদ্দ না দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে স্লট বরাদ্দ দিতে হবে। বিমানবন্দরের মেরামত কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সিভিল অ্যাভিয়েশনের আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, তাদের আয় অনেকভাবে হয়ে থাকে। এর মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির ল্যান্ডিং চার্জ, পার্কিং চার্জ, ওভার ফ্লাইয়িং চার্জ এবং বোর্ডিং চার্জ থেকে আয় করে থাকে। এরপরেও সিভিল অ্যাভিয়েশন গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের আয়ে ভাগ বসাতে চাচ্ছে।

এ ব্যাপারে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবাকে নীতিমালায় আনার জন্য সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাতে যাত্রী সেবার মান বাড়বে। এখন ওই নীতিমালা বাস্তবায়ন করবে সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি। তারা যেদিন বাস্তবায়ন করবে সেদিন থেকেই নীতিমালা কার্যকর হবে।’

অতিরিক্ত সচিব মো. জিয়াউল হক আরও বলেন, এই নীতিমালার ফলে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়াও যেকোনো এয়ারলাইন্স গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দিতে পারবে। এজন্য সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে সব এয়ারলাইনসের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। যে কেউ টেন্ডারের মা্ধ্যমে কাজ পেতে পারেন।

এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দিতে সিভিল অ্যাভিয়েশনকে লাইসেন্স ফি দিতে হবে। এর বাইরে আর কোন ফি দিতে হবে না বলেও জানান, জিয়াউল হক।

এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে বিমানের আয় কমবে কি না জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এয়ারপোর্ট সার্ভিস বিভাগের জিএম নুরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন কোন নীতিমালা ছিল না। এবার একটি নীতিমালা হয়েছে। দেখা যাক কি ঘটে। এখানে এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই আমার।

তবে নীতিমালা সংক্রান্ত সিভিল অ্যাভিয়েশনের কাছে যে চিঠি পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে, সেই চিঠি এখনো পাননি বলে জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান। তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাস হওয়া যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, চিঠি পেলে তাতে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাই বাস্তবায়ন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সম্পর্কে জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনেসের জনসংযোগ বিভাগের জিএম শাকিল মেরাজ বুধবার বিকেলে সারাবাংলাকে বলেন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবার মান বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম কেনা শুরু হয়েছে। এ জন্য বিমানের একশ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এই খাতে কার্গো, টাফিক ও সিকিউরিটি বিভাগ মিলে এক হাজার সাত শ জনবল রয়েছে। সম্প্রতি ৬৩৭ জন নতুন জনবল নিয়োগ করার পাশাপাশি একশ জন নতুন জনবল নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সিটিকে রুখে দিল নিউক্যাসেল
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৮

সম্পর্কিত খবর