Saturday 07 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেলাই প্রশিক্ষকের সাথে প্রেমের অপরাধে তিন বছর বন্দি


১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৩ | আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৪
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সোহেল রানা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।  

দিনাজপুর: প্রেম করার অপরাধে কলেজ পড়ুয়া মেধাবী এক ছাত্রীকে দীর্ঘ তিন বছর ধরে অন্ধকার ঘরে আবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে পরিবারের বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মশিউর রহমান।

নবাবগঞ্জের নয়াপাড়া গ্রামের রোস্তম আলীর মেয়ে সুরাইয়া আক্তার সুমি। পরিবারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সে। নাববগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা চলা অবস্থায় সেলাই প্রশিক্ষক রাকিউল ইসলামের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে সুমি। তাদের প্রেমের সর্ম্পকটি মেনে নেয়নি মেয়েটির পরিবার। আর এ কারনে সুমির জীবনে দীর্ঘ তিন বছর কেটে যায় অন্ধকার একটি ঘরে।

বিজ্ঞাপন

সুমির প্রতিবেশীরা জানান, দীর্ঘ দিন থেকে মেয়েটিকে তার বাবা-মা ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন। তার পরিবার কুঃসংস্কারে বিশ্বাস করে বলে মেয়েটিকে পাঁচ বছর ধরে অন্ধকার ঘরে রাখতে চেয়েছিল। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেয়েটিকে উদ্ধার করে।

নিজ সন্তানের সাথে এমন অমানবিক আচরণ করায় পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলাকাবাসী।

মেয়েটিকে ঘর থেকে উদ্ধারের সময় বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, অনেকদিন বন্দি থাকায় মেয়েটির মুখ ও পা বিবর্ণ হয়ে গেছে। হাতের আঙুল গুলো কুঁকড়ে গেছে। বসতে কিংবা দাঁড়াতে পারছেন না। কথা বলার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে সুমি।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়ের মা বলেছেন, ‘আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে যে কারনে তাকে ঘরের মধ্যে রেখেছি। গাঁয়ের লোক কেউ চায় না আমি সুখে শান্তিতে থাকি। মানুষ যা বলছে সব মিথ্যা।’

নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা খায়রুল আলম সারাবাংলাকে জানান, মেয়েটিকে উদ্ধারের পর থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্তাবধানে প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। সে সুস্থ্য হয়ে উঠলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাহিরে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিনের অপ চিকিৎসায় ও ঘরবন্দী থাকায় মেয়েটির রক্তশূন্যতা দেখা দিয়েছে। সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে চর্মরোগ আর ফাঙ্গাস। ছাত্রীটি শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। তবে খুব দ্রুত সে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি যে মেয়েটিকে তার পরিবার দীর্ঘদিন থেকে আটকে রেখেছে। এমন সংবাদ পেয়ে আমি মেয়ের বাবাকে অফিসে ডাকলে মেয়ের বাবা আমাকে বলে তার মেয়ে অনেক অসুস্থ। যে কারনে তাকে ঘরে রাখা হয়েছে। পরে আমি পুলিশ দিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।’

সারাবাংলা/টিএস

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান দিনাজপুর প্রেম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর