Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্রামীণফোনকে এসএমপি ঘোষণা, প্রতিযোগিতা তৈরি হবে টেলিমার্কেটে


১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:২৩

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনকে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) ঘোষণা করায় বাজার নিয়ন্ত্রণে কোম্পানিটির একচেটিয়া ক্ষমতা কমে যাবে। এতে অন্য মোবাইল কোম্পানি বাজারে প্রতিযোগীতায় সক্ষম হবে। গ্রামীণ ফোনকে এসএমপি ঘোষণা করায় এখন থেকে বাজারে প্রতিষ্ঠানটির করণীয় ও বর্জনীয় নির্ধারণ করে দিতে পারবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি।

জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সারাবাংলাকে বলেন, যে যে শর্তে এসএমপি ঘোষণা করা যায়, গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে তার দুটি শর্তই পূরণ হয়েছে। গ্রামীণফোনকে এসএমপি ঘোষণা করায় খুব সঙ্গত কারণেই এখন থেকে বাজারে তাদের করণীয় ও বর্জনীয় নির্ধারণ করতে পারবে বিটিআরসি। আর এটা অন্যান্য কোম্পানিরও দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।

বিটিআরসির মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খান সারাবাংলাকে বলেন, গ্রাহক সংখ্যা ও অর্জিত রাজস্ব আয়ের দিক থেকে গ্রামীণফোনের বাজার শেয়ার ৪০ শতাংশের বেশি হওয়ার প্রতিষ্ঠানটিকে তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতাসম্পন্ন পরিচালনকারী ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রাহক সংখ্যা, অর্জিত বার্ষিক আয় বা কমিশন কর্তৃক বরাদ্দকৃত তরঙ্গের কোনো একটিতে ৪০ শতাংশের বেশি শেয়ার থাকলেই ওই কোম্পানিকে এসএমপি ঘোষণা করার বিধান রয়েছে। আর গ্রামীণফোন দু’ক্ষেত্রেই এ শর্তে পড়ে। ফলে, বাজারে প্রতিষ্ঠানটির করণীয় ও বর্জনীয় আমরা নির্ধারণ করে দিতে পারবো।

এক প্রশ্নের উত্তরে বিটিআরসির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রামীণফোন কি করতে পারবে কি করতে পারবে না, তা নিয়ে আমাদের কাজ চলছে, আমরা তা অচিরেই জানিয়ে দেবো। এটি করা হবে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে। এর ফলে গ্রাহক আরও উন্নত সেবা পাবে আর একই সাথে অন্যান্য কোম্পানির সঙ্গে আরও প্রতিযোগিতা তৈরি হবে।

এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন সৈয়দ তালাত কামাল সারাবাংলাকে বলেন, এসএমপি রেগুলেশনের ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন আন্তর্জাতিক ও টেলিযোগাযোগ খাতের সর্বোচ্চ মানসম্মত নিয়মগুলো বিবেচিত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার মাধ্যমে সবার জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।

গ্রামীণফোনকে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার ঘোষণা করায় বাজারে কী ধরণের প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রবি আজিয়াটা ও বাংলালিংকের কর্মকর্তারা সারাবাংলাকে বলেছেন, গ্রামীণফোনকে এসএমপি ঘোষণা করা হলেও এখনো বাজারে তাদের করণীয় বা বর্জনীয় নির্ধারণ করা হয়নি। কমিশন কর্তৃক এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি হলেই এর প্রভাব বোঝা যাবে। যেহেতু এখনো নির্দেশনা জারি হয় নি তাই বিষয়টি নিয়ে এখনই মন্তব্যের সময় আসেনি বলে মনে করেন তারা।

এসএমপি: এসএমপি বলতে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ারকে বোঝায়। অর্থাৎ কোনো একটি খাতে একক কোম্পানি হিসেবে যদি কারো সবচেয়ে বেশি শেয়ার থাকে বা বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকে তবে ওই কোম্পানিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসএমপি ঘোষণা করা হয়ে থাকে। এর ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণে করণীয় ও বর্জনীয় নির্ধারণ করে দেয় সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এতে একচেটিয়া ক্ষমতা হারায় ওই কোম্পানি। বাজারে অন্যান্য কোম্পানিও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জন করে।

সম্প্রতি বিটিআরসির জারি করা এক প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, খুচরা মোবাইল সেবা সংশ্লিষ্ট বাজারের নির্ণায়কসমূহ তথা গ্রাহক সংখ্যা, অর্জিত রাজস্ব ও কমিশন কর্তৃক বরাদ্দকৃত তরঙ্গ-এই তিনটি নির্ণায়কের মধ্যে কোনো মোবাইল অপারেটর ন্যূনতম একটিতে মোট বাজারের অন্তত ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করলেই সেটিকে এসএমপি হিসেবে নির্ধারণের বিধান রয়েছে। ফলে, গ্রাহক সংখ্যা ও রাজস্ব আয়ের দিক থেকে এসএমপির শর্তের মধ্যে পড়েছে গ্রামীণফোন।

বিটিআরসির ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রবিধানমালা অনুসারে এসএমপি অপারেটর হিসেবে গ্রামীণফোনের করণীয় ও বর্জনীয় সংক্রান্ত নির্দেশ পরবর্তীতে জারি করা হবে। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১০ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে বিটিআরসি।

সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম

গ্রামীণফোনকে এসএমপি ঘোষণা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর