কারাগারে ব্যক্তিগত চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার আবেদন
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:৪৪
।।স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সমস্যাগুলো দিন দিন বাড়ছে। এ জন্য তার ব্যক্তিগত চিকিৎসককে কারাগারে এনে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।’ মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি শেষে তিনি এই আবেদন জানান।
এদিন, খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে দুপুর ১২ টা ২৬ মিনিটে আদালতে আনা হয়্। এরপর বিচারক ১২ টা ২৮ মিনিট এজলাসে উঠে ২ টা ৫ মিনিট পর্যন্ত বিচারকার্য পরিচালনা করেন।
এরপর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও শহীদুল ইসলামের আংশিক চার্জ শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহদেম তালুকদার বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বর মাসে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করা হয়েছিল। চিকিৎসা অসমাপ্ত অবস্থায় খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে আনা হয়েছে। তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের একটি আবেদন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তার সমস্যাগুলো দিন দিন বাড়ছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসককে কারাগারে এনে তার চিকিৎসা করার প্রয়োজন। দয়া করে একটি চিকিৎসা বিষয়ে আদেশ দিন। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ আছে। ’ এ সময় উচ্চ আদালতের আদেশ জমা দেওয়ার কথা বলে এ বিষয়ে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান বিচারক।
শুনানির পুরো সময় এজলাসে খালেদা জিয়া চুপ ছিলেন।
আরও পড়ুন: এখনও জানতে পারলাম না আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটা কী: মওদুদ
উল্লেখ্য, কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পরের বছর ৫ মে ওই মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান। অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
নাইকো ছাড়াও গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিলের আবেদন জানিয়ে আলাদা রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। এসব রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতির মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট বিভাগ।
কয়েক বছর স্থগিত থাকার পর মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল নিষ্পত্তির আবেদন জানায় দুদক। পরে গতবছর আলাদা আলাদা শুনানি শেষে মামলা তিনটি সচলের রায় দেন আদালত।
এই মামলার প্রধান আসামিরা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভুঁইয়া, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন।
তিনজন আসামি পলাতক। তারা হলেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
গত বছরের ৫ মে এই মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামি সাবেক সচিব শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতে খালেদা জিয়াসহ মামলার ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান।
সারাবাংলা/এআই/এমএনএইচ