রোহিঙ্গাদের চাপেও খাদ্য সংকটের আশঙ্কা নেই: খাদ্যমন্ত্রী
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৯:৩২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বাংলাদেশ এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হওয়ায় বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিলেও তাদের কারণে খাদ্য সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে বাংলাদেশ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। খাদ্য অধিদফতর ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য ঋণে খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করে রোহিঙ্গাদের এ বাড়তি চাপেও দেশে আপাতত খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরেক সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, গত ১০ বছরে দেশে সরকারিভাবে চাল মজুদের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছর শেষে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোর ধারণক্ষমতা ছিল ১৭ দশমিক ১৭ হাজার লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে এসব গুদামের ধারণক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ২০ দশমিক ২৩ লাখ মেট্রিক টন। সরকারি গুদামে চালের মোট মজুদ এখন ১৩ দশমিক ৫৪ লাখ মেট্রিক টন, যা সন্তোষজনক বলে বিবেচিত হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, খাদ্যশস্যের বাজারদরে ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং দরিদ্র ও নিম্ন আয়ভুক্ত মানুষের কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে ওএমএস কর্মসূচিতে চাল ও আটা বিতরণ করা হয়। ঢাকা মহানগর ও আশেপাশের শ্রমঘন এলাকাসহ বিভাগীয়, জেলা শহর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিলারের মাধ্যমে চাল বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিগত ১০ বছরে গড়ে প্রতিবছরে প্রায় ২২৪ হাজার মেট্রিক টন চাল ওএমএস খাতের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে, যা চালের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র জনসাধারণকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচিটি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অন্তর্ভুক্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ। এ কর্মসূচির নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং এর স্লোগান হচ্ছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে সুপরিকল্পিতভাবে সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থার খাতসমূহে খাদ্যশস্য বরাদ্দ, বিলি-বিতরণ এবং মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে খাদ্যশস্যের সরবরাহ ও বাজারমূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
সরকারি দলের ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে মোট খাদ্য গুদামের সংখ্যা ২ হাজার ৭২২টি এবং গম সংরক্ষণের জন্য সাইলো রয়েছে সাতটি। এসব খাদ্য গুদামের সর্বমোট ধারণক্ষমতা ২১ লাখ ১৮ হাজার ৮২২ মেট্রিক টন। সর্বশেষ গত ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, দেশে মজুত খাদ্যশস্যের পরিমাণ ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৩১৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চালের পরিমাণ ১৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪২ মেট্রিক টন এবং গম মজুদের সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫২৬ মেট্রিক টন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর