‘মানুষ যাতে মনে রাখেন একজন এমপি ছিল, যাকে পাশে পেয়েছি’
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩২
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: একাদশ সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনীত হয়েছেন রাজশাহীর আদিবা আনজুম মিতা। তিনি ১৯৯০-১৯৯৮ পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে ছাত্ররাজনীতিতে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সদস্য সচিব নির্বাচিত হন তিনি। সংগঠনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ঢাকায় রাজপথে গ্রেফতার ও নির্যাতিত হন।
মিতা রাজশাহী মহানগরের কেশবপুর এলাকার আব্দুস সালেহ সামস এর মেয়ে। তার স্বামীর নাম ডা. মেজবাউল করিম রুমেল। বিবাহিত ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তানের জননী। ছেলে আতিক করিম নির্ঝর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েন এবং মেয়ে নাফিশা মালিয়া মুনমুন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আদিবা আনজুম মিতা বলেন, ‘প্রতিক্রিয়া, এটা আসলে বলে প্রকাশ করা যাবে না। নেত্রী আমাকে এত বড় একটা জায়গা দিয়েছেন কাজ করার জন্য। ছাত্ররাজনীতি থেকে এসে যুব মহিলা লীগ, যুব মহিলা থেকে সংসদ সদস্য, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।’
রাজশাহী অঞ্চলের মহিলা নেত্রী ও কর্মীদের প্রতি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও পরামর্শের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার দিকটি তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা যাতে নিজেরাই নিজের এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে। কারণ সবাই তো আর এমপি হবে না, কেউ কমিশনার হবে, কেউ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হবে। তাই এইভাবে যতটুকু পারি তাদের কাজ করেছি। উন্নয়নের কাজ আসলে পার্লামেন্ট মেম্বার না হয়েও যথেষ্ট করেছি। কিন্তু এখন পার্লামেন্ট মেম্বার হওয়াতে আমি মহিলাদের জন্য আরও বেশি কাজ করার সুযোগ পেয়েছি এবং করে যাব।’
নারী সমাজের ভাগ্য উন্নয়নের গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে আরও বলেন, ‘রাজশাহী এলাকায় আদিবাসী আছে। আদিবাসীদের কীভাবে সহযোগিতা করতে পারবে কীভাবে তারা উন্নয়নের সাথে সংযুক্ত হবে, এই চিন্তাধারা আছে। বিশেষ করে মেয়েদের নাবালক বিবাহ যাতে বন্ধ হয়ে যায়, যাতে কোন পিতা-মাতা ইচ্ছা প্রকাশ না করে। কারণ এখনো নাবালক বিবাহ আছে, মেয়েরা যাতে মিনিমাম ইন্ডারমিডিয়েট পাস করে, বাবা-মায়েরা যাতে মিনিমাম মেয়েদের ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর বিবাহ দেয়, সে ব্যাপারে জনমত তৈরিতে কাজ করার ইচ্ছা আছে।’
‘আমি চাই, আমাদের মেয়েরা শিক্ষিত হবে এবং উন্নয়নশীল হবে এবং সবার কোনো না কোনো কর্মক্ষম থাকবে এবং স্বামীর ওপর নির্ভরশীল থাকবে না। এটা হচ্ছে আমার লক্ষ্য।’
রাজনীতিতে উঠে আসার অন্তরালে স্বামীর সহযোগিতার কথা স্মরণ করে আদিবা আনজুম বলেন, ওনার সহযোগিতা না থাকলে এতো দূর আসতে পারতাম না। যখন ‘এমপি’ হয়েছি, সবার ফোন পেয়েছি, সবাই অভিনন্দন জানিয়েছেন। ‘এমপি’ না হলে বুঝতে পারতাম না রাজশাহীবাসী আমাকে এতো ভালবাসে।
রাজনীতিতে থেকে জনগণের জন্য কাজ করতে চাইলে কাজের কোন শেষ নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার তো কাজের শেষ নাই, কাজ আমাকে আরও করতে হবে। আল্লাহ আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমাকে একটা ‘দান’ দিয়েছেন মানুষের জন্য কাজ করার। জননেত্রী শেখ হাসিনা মহিলাদের জন্য এত করেছেন, এটাকে যদি আমরা আরও সুষমভাবে সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে গ্রাম বাংলার মহিলাদের আর কষ্ট হবে না।’
সারাবাংলা/এনআর/একে