১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:০৮
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: গত ২০ বছর ধরে ব্যাংকিং খাতে কি পরিমাণ অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে তা নির্ণয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঋণ খেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিটের শুনানির সময় আদালত বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এরইমধ্যে অর্থনৈতিকভাবে একটি নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি খুব দ্রুত বন্ধ করে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে একটি শক্তিশালী জায়গায় নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে।
আদালত বলেন, সরকারি এবং বেসরকারী ব্যাংকে নিয়ম-নীতি মেনে ঋণ প্রদান করার কথা ছিলো। যদি তা না মানা হয়, যারা যারা ঋণ গ্রহণ করেছেন এবং অর্থ পাঁচার করেছেন তাদের তালিকা করে এবং তাদের আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধার করে একটি প্রতিবেদন করে আদালতে দাখিল করতে হবে। এছাড়াও, ওই আত্মসাতের অর্থ দেশ কিংবা বিদেশের যেখানেই থাকুক না কেন তা (আত্মসাতকৃত অর্থ) ফিরিয়ে আনতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তাও প্রতিবেদন উল্লেখ করতে হবে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পরে ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন। একটি কমিশন গঠন করে ঋণ খেলাপী ও অর্থ আত্মসাতকারীদের তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই তালিকা দাখিলের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ আদালত এখনও জানাননি আদালত।
গত ২৩ জানুয়ারি ব্যাংকিং খাতে অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, বিভিন্ন প্রাইভেট ও পাবলিক ব্যাংকগুলোতে ঋনের ওপর সুদ মওকুফ সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত এবং তা বন্ধে সুপারিশ প্রনয়ণের জন্য কমিশন গঠন করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সহ ৫ মন্ত্রণালয়ের সচিবদের একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো। বাংলাশে ব্যাংকের গভর্নর ছাড়াও নোটিশপ্রাপ্ত অন্যরা ছিলেন, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং আইন মন্ত্রণালয় সচিব।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইআরপিবি) পক্ষে এ নোটিশ প্রেরণ করেন। নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের বিষয় তদন্ত ও প্রতিরোধে সুপারিশ প্রনয়নের জন্য ১৯৫৩ সালের ইনকোয়ারী কমিশন অ্যাক্টের অধীনে একটি কমিশন গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছিলো। কিন্তু সে নোটিশের কোন সদুত্তর না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
সারাবাংলা/এজেডকে/জেএএম/জডএফ
ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ
ব্যাংক দুর্নীতি নির্ণয়ে কমিটি
হাইকোর্টের রুল