ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:৪৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
সংসদ ভবন থেকে: বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যারা অল্প আসন পেয়ে অভিমান করে সংসদে আসছেন না, এটা তাদের ভুল সিদ্ধান্ত।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংসদ অধিবেশনের প্রশ্ন-উত্তর পর্বে তিনি আরও বলেন, সংসদে এলে তারা কথা বলার সুযোগ পাবেন। সংসদ টিভি আছে, যেটা নানা দেশের মানুষ দেখেন। এই সুযোগ তারা কেন হারাচ্ছেন- তা আমি জানি না।
এর আগে সম্পূরক প্রশ্নে ফখরুল ইমাম বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) বৈঠক করে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করলেন যে, এই বাংলাদেশে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু ইলেকশন হলো। যে ইলেকশনের জন্য আমরা ৯৭টি দেশের স্বীকৃতি পেয়ে গেলাম। সম্পর্কের দ্ধিধা হোক, থমকে দাঁড়ায় স্মৃতির বীর, বয়ে চলে জীবন স্রোত। এখন যে স্রোতটা চলবে- রাজনৈতিক স্রোত। যারা আছে, যারা ৭টি সিট নিয়ে এখনো বাইরে অপেক্ষা করছে, তাদের প্রতি আপনার বার্তা কি?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ বছরের উন্নয়নের সুফল জনগণ পেয়েছে। এই কারণে তারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে। এ সময় ছোটবেলায় গ্রামে বেড়ে ওঠার স্মৃতিচারণ করেন শেখ হাসিনা।
“গ্রামের কাদা-মাটি মাখা পরিবেশে বড় হয়েছি। এখনো মনটা পড়ে থাকে গ্রামে। যখন অবসর নেব, গ্রামেই থাকব”- বলেন তিনি।
বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া, জাপান এবং ওআইসির নেতারাসহ প্রায় সব গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান আমাকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৯৭টি দেশের জনগণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। এসব বার্তা পেয়ে দেশবাসীর সঙ্গে আমিও গর্বিত ও আনন্দিত। বিশ্ব নেতারা আমাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে তারা বাংলাদেশকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখে। এছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে কাজ করে যাব। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ এবং শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব।
নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনীতি করে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে চেয়েছে। তবে আমাদের ঐকান্তিক চেষ্টার ফলে বারবার তা ব্যর্থ হয়েছে। কুচক্রি মহল যাতে কোনোভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ক্ষেত্র তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার বদ্ধ পরিকর। অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর।
সিলেট-৩ আসনের সংসদ মাহমুদ সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা জানান, দেশব্যাপী সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস ও সড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সড়ক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে অভিভাবকদের সড়ক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বিষয়ে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে লিফলেট ও প্রচারপত্র প্রস্তুত করে বিতরণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইশতেহারের অন্যতম বিষয় তারুণ্যের শক্তি: বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। বিগত ১০ বছর ধরে যুবকদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, তাদের মেধা ও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ অবারিত করতে আমাদের সরকার সম্ভাব্য সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রশিক্ষণ, ঋণ সুবিধা, অনুদান ও কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যুব সমাজকে শিক্ষিত, দক্ষ, কর্মমুখী ও আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১১টি জেলায় নতুন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। গত ১০ বছরে ২৪ লাখ তরুণ-তরুণিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এটি