Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভবন নির্মাণে বীমা বাধ্যতামূলক: পূর্তমন্ত্রী


১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:৪০

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বীমা বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, আজকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বীমা বাধ্যতামূলক। এ কারণে যিনি ভবন নির্মাণের দায়িত্ব নিচ্ছেন, তিনি আর যেনতেনভাবে সেটা আর নির্মাণ করতে চাইবেন না।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে ‘রাজউক-চউক-এর সেবা সহজীকরণ’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রী।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দেখি। ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যর্থতা, ডেভেলপারদের ব্যর্থতা, অতি লোভী কিছু লোকদের ব্যর্থতা, আমরা যারা নিজেরা দালান করতে চাই তাদেরও ব্যর্থতা রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে অকালে শ্রমিকদের প্রাণ ঝরে যায়, ভবনে বসবাসকারী সুন্দর পরিবারটি ধ্বংস হয়ে যায়। ভবন নির্মাণে বীমা বাধ্যতামূলক করার কারণে কেউ আর যেনতেনভাবে ভবন নির্মাণ করবে না। কারণ তিনি ভাববেন, এই ভবন ধসে গেলে তাকে বীমার টাকা পরিশোধ করতে হবে। আর কেউ যদি অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার শিকার হয়ে থাকেন, তার পরিবারও একটা নিশ্চয়তা পাবে। কারণ বীমা থেকে সে ক্ষতিপূরণ পাবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এই বীমা পদ্ধতি আছে। আমরাও সেটি ইম্পোজ করলাম।

বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিনের অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তির থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা যুগান্তকারী কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকে ১৬টির পরিবর্তে মাত্র চারটি সংস্থার অনাপত্তির ভিত্তিতে ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন দেবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ (রাজউক) অন্যান্য কর্তৃপক্ষগুলোও। আগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মতো আমাদের অন্যান্য যেসব নগর কর্তৃপক্ষ রয়েছে, সেগুলো থেকে ভবন নির্মাণের জন্য নকশার অনুমোদন নিতে ১৬টি স্তর অতিক্রম করতে হতো। এই স্তরগুলো অতিক্রম করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হতো। আমরা এটি গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছি। বিডা আমাদের এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি গতানুগতিক ভাবে যে ১৬টি স্তর অতিক্রম করতে হতো, এর কোনো আবশ্যকতা নেই। এগুলো কেবল সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়ানো ও নামকাওয়াস্তে একটি পদ্ধতির ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়। সেই ভোগান্তি দূর করে সহজ করার মধ্য দিয়ে জনসেবাকে মানুষের দোরগোড়াতে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।

নকশা অনুমোদনের চারটি স্তর তুলে ধরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, এখন থেকে চারটি ধাপে অনাপত্তিপত্র নিতে হবে— ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র, ভবনের উচ্চতার বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের অনাপত্তিপত্র, ১০ তলার চেয়ে বেশি উচ্চতার ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তিপত্র এবং বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিশেষ বিশেষ এলাকা বা স্পর্শকাতর এলাকার পাশে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর অনাপত্তি। এর বাইরে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ, গ্যাস সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা, পুলিশ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ১২টি সংস্থার অনুমোদন আর প্রয়োজন হবে না।

নকশা পাসের জন্য সর্বোচ্চ ৫৩ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগে অনুমোদনের জন্য সর্বোচ্চ সময় লাগত ১৫০ দিন। এটা কমিয়ে আমরা ৫৩ দিনে নিয়ে আসছি। এক্ষেত্রে ব্যয় কমে যাবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সাত দিনের মধ্যেও অনুমোদন পাওয়া সম্ভব হবে।

নকশা অনুমোদনের প্রক্রিয়া অনলাইনে অটোমেশন পদ্ধতিতে কার্যকর করার কথা জানিয়ে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত চারটি অনুমোদনপত্র নিয়ে আবেদন করতে হবে। যেকোনো একটি আবেদন যদি পূরণ না হয়ে থাকে তবে অনলাইনে সেই আবেদন গ্রহণ হবে না। নতুন পদ্ধতিতে কাউকে দালালের কাছেও যেতে হবে না। এখন থেকে কাউকে রাজউক বা চউকে যাওয়ার দরকার নেই। অটোমেশন পদ্ধতিতে আপনার প্ল্যান অনুমোদন পাওয়া বা না পাওয়ার তথ্য আমাদের দফতর থেকে মেসেজ আকারে চলে যাবে।

বিজ্ঞাপন

আগামী ১ মে থেকে আর কোনো ম্যানুয়ালি নকশা অনুমোদন বা অন্য কোনো আবেদনের সুযোগ থাকবে না বলেও জানান মন্ত্রী।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিডা চেয়ারম্যানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এইচএ/এসবি

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বীমা শ ম রেজাউল করিম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর