‘৪ সংস্থার অনাপত্তিতে ভবন নির্মাণ, অনুমোদন ৫৩ দিনের মধ্যে’
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৯:০৯
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: এতদিন ১৬টি সংস্থার অনাপত্তিপত্র প্রয়োজন হলেও এখন থেকে মাত্র চারটি সংস্থার অনাপত্তিতেই রাজধানীতে ভবন নির্মাণ করা যাবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য নকশার অনুমোদন নিতে ১৬টি স্তর অতিক্রম করতে হতো। এই স্তরগুলো অতিক্রম করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হতো। দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তির অবসানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি— এখন থেকে ১৬টির পরিবর্তে মাত্র চারটি সংস্থার অনাপত্তির ভিত্তিতে ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন দেবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ (রাজউক) অন্যান্য কর্তৃপক্ষগুলো।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে ‘রাজউক, চউক-এর সেবা সহজীকরণ’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রী।
ভবন নির্মাণের জন্য যে চারটি সংস্থার অনাপত্তিপত্র প্রয়োজন হবে, সেগুলোর কথা তুলে ধরে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ভবন নির্মাণে ভূমি ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি ভবনের উচ্চতার বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের অনাপত্তিপত্র লাগবে। এছাড়া ১০ তলার চেয়ে বেশি উচ্চতার ভবনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তিপত্র। আর বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিশেষ ও স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে লাগবে নিরাপত্তা বাহিনীর অনাপত্তি। এর বাইরে আর কোনো সংস্থার অনাপত্তিপত্র বা অনুমোদন প্রয়োজন হবে না।
এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে রাজধানীতে ভবন নির্মাণের জন্য সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ, গ্যাস সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা, পুলিশ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ১২টি সংস্থার অনুমোদনের আর প্রয়োজন হবে না।
মন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি, গতানুগতিকভাবে যে ১৬টি স্তর অতিক্রম করতে হতো, এর কোনো আবশ্যকতা নেই। সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়ানো ও নামকাওয়াস্তে একটি পদ্ধতির ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া ছাড়া এত স্তরের আর কোনো কার্যকারিতা নেই। সেই ভোগান্তি দূর করে সহজ করার মধ্য দিয়ে জনসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।
কেবল অনুমোদনের ধাপ কমানো হয়, অনুমোদন পাওয়ার সময়ও কমিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানান গণপূর্তমন্ত্রী। তিনি বলেন, আগে ভবন নির্মাণের আবেদন করা হলে অনুমোদনের জন্য ১৫০ দিন পর্যন্ত সময় লাগত। এটা কমিয়ে আমরা ৫৩ দিনে নিয়ে আসছি। এক্ষেত্রে ব্যয়ও কমে যাবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সাত দিনের মধ্যেও অনুমোদন পাওয়া সম্ভব হবে।
নকশা অনুমোদনের প্রক্রিয়া অনলাইনে অটোমেশন পদ্ধতিতে কার্যকর করার কথা জানিয়ে মন্ত্রী রেজাউল করিম বলেন, নির্ধারিত চারটি অনুমোদনপত্র নিয়ে আবেদন করতে হবে। যেকোনো একটি আবেদন যদি পূরণ না হয়ে থাকে তবে অনলাইনে সেই আবেদন গ্রহণ হবে না। আর অনুমোদন থাকলে বাড়তি কিছু লাগবে না, কাউকে দালালের কাছেও যেতে হবে না। অটোমেশন পদ্ধতিতে প্ল্যান অনুমোদন পাওয়া বা না পাওয়ার তথ্য আমাদের দফতর থেকে মেসেজ আকারে চলে যাবে।
আগামী ১ মে থেকে আর কোনো ম্যানুয়ালি নকশা অনুমোদন বা অন্য কোনো আবেদনের সুযোগ থাকবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিডা চেয়ারম্যানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এইচএ/টিআর