জনগণকে কিছু বলার নৈতিক অধিকার নেই বিএনপির : হানিফ
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৫৫
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
বিএনপির শীর্ষ নেত্রী আদালত কর্তৃক দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন, তাই দলটির এই দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে কিছু বলার নৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বপ্ন ফাউন্ডেশন আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এই কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হানিফ বলেন, যারা ক্ষমতায় থাকতে দেশকে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব পরিমণ্ডলে পরিচিতি দিয়েছিল, ক্ষমতার বাইরে থাকাকালীন সময়েও যারা বারবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছে, তারাই নতুন করে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কারণ বিএনপি-জামায়াতের সামনে এখন রাজনৈতিক কোন ইস্যু নেই, জাতির কাছে তাদের বলার মতো কিছু নেই। তাই স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তাদের যদি নির্বাচন নিয়ে কোন অভিযোগ থাকে তবে আইন মোতাবেক নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করুক, আর যদি অভিযোগ করেও থাকে তবে মামলার নিষ্পত্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করুক। নির্বাচন নিয়ে অপ্রয়োজনীয় কথা বলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য জাতির উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার কোন অধিকার তাদের নেই। দেশের মানুষ তাদের ভাঙ্গা-রেকর্ড আর শুনতে চায় না। তাদের যদি সত্যিকার অর্থেই রাজনীতি করার ইচ্ছে থাকে তবে তাদের আহ্বান জানাচ্ছি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের উন্নয়নে সহায়তা করুক।
এসময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আশা করি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচনটি সকল ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণের উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে এবং সাধারণ ছাত্ররা তাদের ভোটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণের জন্য উপযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন করবে।
বাংলা ভাষাকে বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ ভাষা হিসেবে উল্লেখ করে হানফি বলেন, পৃথিবীতে কোন ভাষায় একটি মাত্র অক্ষরের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ শব্দ তৈরি হয় না, মা শব্দটি মাত্র এক অক্ষরের হয়েও এর আবেগ আর অনুভূতি সীমাহীন। আর কোন দেশের মানুষকে ভাষার জন্য প্রাণ দিতে হয়নি, আর এই ত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বাংলা ভাষা ব্যবহারের ঘাটতি নিয়ে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় হলো এদেশে বাংলা ভাষার ব্যবহার এখনও সর্বজনীন হয়নি। আদালতেও এখনও ইংরেজি ভাষায় রায় লেখা হয়, যেটা অনেক ক্ষেত্রেই সর্বসাধারণ বোধগম্য হয় না। এমন অনেক খাতেই বাংলা ভাষার বহুল ব্যবহার প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, তরুণ প্রজন্ম এখন ভাষা ও ইতিহাস নিয়ে আমাদের থেকে বেশি সচেতন। তাদেরকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপি জামায়াতের অপচেষ্টা কখনোই সফলতার মুখ দেখবে না।
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, বিএনপি জামায়াত হচ্ছে বাংলাদেশের ভাষা ও সংস্কৃতির শত্রু। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াও ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় উর্দু ভাষায় ব্যবহার করে। এসব দেশ বিরোধী রাজনৈতিক দলকে একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করে দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে।
স্বপ্ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, চাঁদপুর-২ আসনের সাংসদ মো. নূরুল আমিন রুহুল সহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সারাবাংলা/ওএম/এনএইচ