Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডাকসু নির্বাচন: ভোটকেন্দ্র নিয়ে নিজ অবস্থানে অনড় ছাত্র সংগঠনগুলো


১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:৪৭

।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাবি: আসন্ন ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ও ভোটকেন্দ্র নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পৃথক কর্মসূচি থেকে ছাত্রদল, ছাত্রলীগ ও প্রগতিশীল ছাত্র জোট তাদের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেছে তাদের অনড় অবস্থানের কথা।

গত ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচন (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু নির্বাচন। এর আগে ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নির্বাহী সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা হয়। ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রগুলো আবাসিক হলগুলোতেই হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অন্তত তিনমাস সহাবস্থান নিশ্চিত করে তারপর ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি করছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এছাড়া ৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে সাতদফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর স্মারকলিপিও দেয় তারা।

প্রায় নয় বছর পর গত বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মধুর ক্যান্টিনে এসে গণমাধ্যমের কাছে একই দাবি তুলে ধরে ছাত্রদল। এরপর আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো মধুর ক্যান্টিনে এসে তাদের আগের দাবির পুনর্ব্যক্ত করেছে ছাত্রদল।

এ ব্যাপারে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে আছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলাম একটি কার্যকর সহাবস্থান তৈরি হোক। তারা আমাদের সহযোগিতা করছে। ডাকসু নির্বাচনকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। আমরা উপাচার্যের কিছু দাবি দিয়েছিলাম। উপচার্য আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে অন্য অনেক ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আমাদের দাবির মিল আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করবো সেই মিলগুলোকে কার্যকর রেখে তিনি আমাদের দাবির ব্যাপারে আন্তরিকতা প্রকাশ করবেন।’

বিজ্ঞাপন

রাজীব বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের মতো হলগুলোতেও সহাবস্থান চাই এবং সেটি স্থায়ী সহাবস্থান চাই। শুধু ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহাবস্থান আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা চাই গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’

প্রশাসন দাবি না মানলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে চাই।’

এদিকে, সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর ভোটকেন্দ্র আবাসিক হলগুলোতে করার জন্য স্বাগত জানানো হয়েছে। ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসিকেন্দ্রীক সংগঠনগুলো একত্রিত করে এই সংসদ তৈরি করেছে। এই সম্মেলনে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এখানে বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র ঐতিহাসিকভাবে হলগুলোতে হয়ে আসছে। ধারাবাহিকভাবে এবারও সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো আপত্তি নেই বরং তারা স্বাগত জানিয়েছে।

এদিকে, হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থানান্তরের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। আর বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট এই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

আজ দুপুর সোয়া একটার দিকে এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখা সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা। প্রগতিশীল জোট নেতারা হলে ছাত্রসংগঠনগেুলোর সহাবস্থান নেই উল্লেখ করে ভোট কেন্দ্রগুলো একাডেমিক ভাবনে করার দাবি জানায়।

বিজ্ঞাপন

ছাত্রদলের তফসিল পেছানো, প্রগতিশীল জোট নেতাদের ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে করার দাবির বিষয় কীভাবে দেখছে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘সহাবস্থান আছে। দ্বিতীয় হলো হলে হলে ভোটকেন্দ্র হবে এটি আমি বিশ্বাস করি। যদি হলে ভোটকেন্দ্র না হয় তাহলে নৈতিকতার প্রশ্ন উঠবে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের মতো। আমরা শিক্ষকরা এখানে নির্বাচন পরিচালনা করব। সেখানে কেন্দ্র সরানোর প্রশ্ন আমার কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয় না।’

এছাড়া নির্বাচনের পেছানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের ফোরাম আছে। উপাচার্য যদি বিষয়টি সেখানে নিয়ে আসেন তাহলে আলোচনা হবে।’

সারাবাংলা/কেকে/এমআই

ডাকসু

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর