Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিজিবি’র গুলিতে নিহত ৩, প্রতিবাদে উত্তাল ঠাকুরগাঁও


১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:১৮

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

ঠাকুরগাঁও: বিজিবি’র গুলিতে স্কুলছাত্রসহ তিনজন নিহত ও আহতের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল ঠাকুরগাঁও। নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। তিন দিনেও থামছে না স্বজনদের আহজারি। কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে এলাকা। ক্ষোভে  প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে এলাকার মানুষ।

আরও পড়ুন: বিজিবি-‘চোরাকারবারি’ সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ৩

গত মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জেলার হরিপুর উপজেলার বহরমপুর ও রুহিয়া গ্রামে গরু জব্দ করা নিয়ে সংঘর্ষে বিজিবি’র গুলিতে এলাকার চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র জয়নুল, দিনাজপুর সরকারি কলেজের ছাত্র নবাব ও কৃষক সাদেক আলী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছে নারী ও এসএসসি পরীক্ষার্থী আবুল কাশেমসহ ১৬জন। আহতদের ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল,দিনাজপুর ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচেছ। ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিনই তিনজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আরও পড়ুন: নিজেদের রক্ষার্থে ফাঁকা গুলি চালায় বিজিবি

এদিকে মেধাবী ছাত্র নবাব ও স্কুলছাত্র জয়নুলসহ এই তিন জনের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ক্ষোভে- বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে  এলাকার হাজারো মানুষ। গ্রাম থেকে উপজেলা ও জেলা শহরে মানববন্ধন- বিক্ষোভ প্রতিবাদ করছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ কর্মসূচিতে কৃষক-শ্রমিক, ছাত্রসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেয়।

বকুয়া ইউপির ২নং ওর্য়াড সদস্য আব্দুস সাত্তার বলেন, বিজিবি’র গুলিতে নিহত গরিব কৃষক সাদেক আলী তার বড় মেয়ে স্মৃতির বিয়ের অনুষ্ঠানের টাকা যোগাতে বাড়ির গরু বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় বিজিবি’র গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে আছে। তারা সবাই স্কুলে পড়া-লেখা করে। সাদেক একজন বর্গাচাষি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট

এদিকে রুহিয়া গ্রামে নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব এর ইচেছ ছিল শিক্ষক হওয়ার। কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি না হওয়ায় বাড়িতে খুলেছিল কোচিং সেন্টার।

নবাবের ছোট ভাই সুজা বলেন, আশপাশের চার গ্রামের ছেলে-মেয়েরা তার ভাইয়ের কোচিং সেন্টারে পড়তো। ওই কোচিংয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী জোতি  বলেন আমাদের স্যার কে হত্যা করা হয়েছে। এখন কে পড়াবে আমাদের?

আরও পড়ুন: বিজিবির গুলিতে অস্ত্র ফেলে পালাল চোরাকারবারি দল

বহরমপুর গ্রামের নূর ইসলামের একমাত্র ছেলে জয়নুল। ছাত্র হিসেবে ভালো ছিল। তাকে হারিয়ে মা’ জহুরা বেগম নির্বাক হয়ে গেছেন।

অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরদেহ দাফনের জন্য মরদেহ প্রতি ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হলেও আহতদের পাশে কেউ এগিয়ে আসেনি অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ।

হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম.জে আরিফ বেগ বলেন, আপাতত মরদেহ দাফনের জন্য আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে পরিবারগুলোকে। পরবর্তী আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান তিনি।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কে.এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শীলা ব্রত কর্মকারকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ।

এ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও -২ আসনের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম বলেন, বিজিবির গুলিতে তিনজন নিহতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অবগত আছেন। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হবে।

সারাবাংলা/এমএইচ

গুলিতে নিহত ঠাকুরগাঁও বিজিবি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর