সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আগুন, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনেরা
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:১৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের আগুনে হতাহতের কোন ঘটনা না ঘটলেও ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রায় এক হাজারের বেশি রোগীকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তবে এখনো অনেক রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা অপেক্ষা করছেন আগুনে আক্রান্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের খোলা মাঠে। তেমনি কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার প্রতিবেদকের।
দিনাজপুরের এক রোগী জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। সঙ্গে থাকা তার ফুপাতো ভাই মোমিন জানান, আমরা নিচতলায় ছিলাম। আগুন লাগার খবর পেয়ে মুমূর্ষু বোনকে নিয়ে আমরা দ্রুত বের হয়ে যাই।
মোমিন জানান, অন্য কোনো হাসপাতালে সিট না পেয়ে তাদের রিলিজ (ছাড়পত্র) দিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়েছে আগামী সোমবার অথবা মঙ্গলবার আসতে।
এখন তারা নিরুপায় হয়ে আছেন।
এছাড়া, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে এসেছেন স্ট্রোকের একজন রোগী। তিনি ভর্তি হয়েছেন গতকাল বুধবার। স্বজনসহ ছিলেন হাসপাতালের দোতলায়। তার সঙ্গে থাকা একজন জানান, সবাই যখন আগুন আগুন বলে চিৎকার করছিল তখন তারা বেডসহ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন এবং মাঠে অবস্থান নেন। রাত ৯টার দিকে হৃদরোগ হাসপাতালে তার রোগীকে ভর্তি করা হলেও তারা ঢুকতে পারেননি সেখানে। মাঠে তাদের রাত কাটাতে হচ্ছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলার স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন ছড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় ও নিচ তলায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপিরচালক ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে তদন্ত ছাড়া নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। আগুন লাগায় ১০ থেকে ১২টি ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওষুধ, কেমিকেল ও দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে বুঝা যাচ্ছে, আগুনে গ্লাস ও অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরতি হয়। তবে এখন সবকিছু নিরাপদ।
এদিকে, আগুন লাগার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার উত্তম কুমারকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিবে।
ডাক্তার উত্তম কুমার জানান, আমরা হাসপাতালে যারা ছিলাম তারা সবাই অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি এবং রোগীদের বের করে নেই। ১১০০ থেকে ১২০০ রোগীকে আমরা বের করে আনি। কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে।
সারাবাংলা/ইউজে/এনএইচ