বিশ্ব ইজতেমায় লাখো মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৪৯
।।স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ইজতেমা ময়দান থেকে: টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ সম্মেলন ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম বারের মতো এবার চারদিনের ইজতেমা তাবলিগের দুটি পক্ষ দুদিন করে পৃথকভাবে পরিচালনা করছে। দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা ইজতেমায় সমবেত হয়েছেন। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিন থাকায় গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি জুম্মার নামাজ আদায় করতে ইজতেমা ময়দানে আসেন। জুমার নামাজে ইমামতি করেন কাকরাইলের মাওলানা মো. জোবায়ের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন জুমাবার হওয়ায় লাখো মুসল্লির ঢল নামে টঙ্গীর তুরাগ তীরে। জুম্মার নামাজের আগেই ইজতেমার পুরো প্যান্ডেল ও ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। প্যান্ডেলের নিচে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিরা অংশ নেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের সড়ক ও গলিগুলোর ওপর। আশপাশের জেলা থেকেও আসেন মুসল্লিরা। দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা ইজতেমায় উপস্থিত হয়ে বয়ান শোনেন ও জুমার নামাজে অংশ নেন।
ইজতেমা ময়দানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ সাখাওয়াত নোমান সারাবাংলাকে বলেন, ইজতেমার পরিবেশ ভালো। ময়দানে জায়গা নিয়ে সমস্যা। মাওলানা জোবায়েরুল হাসান ও ওমর ফারুক নেতৃত্বে প্রথম পবের্র ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদের সাথে কওমী মাদরাসা মিলিত হওয়ায় ময়দানে জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। এছাড়া এই পক্ষে মাওলানা সাদের অনুসারী ছাড়া নিজাম উদ্দিন মাকার্স থেকে যারা চলে গিয়েছিলেন তারাও প্রথম পবের্র আলেমদের সাথে মিলিত হয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমায় অপ্রীতির যেকোনো ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিংয়ে র্যাবের হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে। ১৭টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো ইজতেমা ময়দান নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বসানো হয়েছে প্রায় ৫০০টি সিসি ক্যামেরা। ডিএমপি থেকে ডগ স্কোয়াড, বোম ডিসপোজাল টিম এবং ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম দায়িত্ব পালন করছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর সারাবাংলাকে বলেন, এবার সার্বিক দিক বিবেচনা করে নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুন বেশি। সেই সঙ্গে বোম ডিসপোজাল টিম ও সোয়াত টিমও থাকবে বিশেষ নজরদারিতে। আর মুসল্লিদের সুবিধার্থে বিআরটিসি বাস ও ট্রেনে যোগ করা হয়েছে বিশেষ সার্ভিস।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মাঠে মুসল্লিদের স্থান সংঙ্কুলান না হওয়ায় ২০১১সাল থেকে টঙ্গীতে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বছর যারা (যে ৩২ জেলার মুসল্লি) টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতেন তারা পরবর্তী বছর সেখানে যেতেন না। ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার পাশাপাশি জেলায় জেলায় আঞ্চলিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এক পক্ষের (মাওলানা জোবায়ের পন্থীদের) পরিচালনায় ইজতেমা। তারা ইজতেমা ময়দান বুঝিয়ে দেবেন দ্বিতীয় পক্ষের (সা’দ পন্থীদের) কাছে। তাদের পরিচালনায় ইজতেমা শুরু হবে রোববার ভোরে। সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের ইজতেমা শেষ হবে।
সারাবাংলা/এসজে/এমএইচ