রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এ বছর দরকার ৭৭৩ কোটি টাকা
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:৪৯
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাৃদের বেঁচে থাকার জন্য এ বছর (২০১৯ সাল) ৯২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ মুদ্রার তহবিল প্রয়োজন। যা বাংলাদেশি টাকায় ৭৭৩ কোটি টাকা। এই টাকা রোহিঙ্গাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য, আবাসনসহ একাধিক খাতে ব্যয় হবে।
জেনেভায় জাতিসংঘের সদর দপ্তরে শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত যৌথ বৈঠকে (জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান) জাতিসংঘেরর শরণার্থী সংস্থা এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) এ তথ্য জানিয়েছে। মূলত ২০১৯ সালে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে কী পরিমাণ আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়াল আলম বাংলাদেশের পক্ষে ওই বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বার্তায় জানিয়েছে।
বৈঠক সম্পর্কে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে প্রকাশ করা বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে চলতি বছর ৯২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ মুদ্রার তহবিল প্রয়োজন। যেখানে রোহিঙ্গাদের খাদ্য, পানি, স্যানিটেশন এবং আবাসন খাতেই তহবিলের অর্ধেক খরচ করতে হবে। বাকিটা খরচ হবে স্বাস্থ্য, আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, পুষ্টি এবং শিশু ও নারীসহ সার্বিক নিরাপত্তা খাতে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক এ্যন্থনিও ভিতরিনো বলেন, ‘সংকটের মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহায়তা গত বছর যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেছে। এই উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়ার জন্য আবারও সকলের সহায়তা প্রয়োজন।’
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের আশ্রয় দেওয়া স্বাগতিক দেশ বাংলাদেশের প্রতি আমাদের মানবিক হতে হবে। চলতি বছরে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে যে তহবিলের প্রয়োজন, আশা করব সবাই মিলে সঠিক সময়ে এ তহবিলের যোগান দিয়ে, মানবিক এই সংকটক মোকাবিলা করতে সকলে এক ছাতার নিচে দাঁড়াবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সময়ে আবারো মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান থাকবে যে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করুন। রোহিঙ্গা সংকটের মূল বিষয় চিহ্নিত করুন এবং তা সমাধান করুন।’
বিগত ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সরকার এবং দেশটির সেনারা রাখাইনের জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক অত্যাচার শুরু করলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে অংশ নেয়। বিগত ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত কমপক্ষে ৯ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে বিগত ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে প্রায় ৩ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে নেয়। সব মিলিয়ে ১২ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে রয়েছে।
সারাবাংলা/জেআইএল/একে