Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ডাকসু দ্বিতীয় পার্লামেন্ট, প্রধানমন্ত্রী চান লিডারশিপ তৈরি হোক’


১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:৩২

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, “গত পরশুদিন আমাদের সঙ্গে প্রধানমমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় পার্লামেন্ট। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় পার্লামেন্টে নির্বাচন চাই; এই ডাকসু নির্বাচন চাই। আমি চাই লিডারশীপ সৃষ্টি হোক’।”

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের এক মতবিনিময় সভার সূচনা বক্তব্যে নানক এসব কথা বলেন। ‘এই নির্বাচন অত্যন্ত সুন্দর, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন’, বলেও জানান নানক।

প্রসঙ্গত, আসন্ন ডাকসু নির্বাচন পরিচালনার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব দেন। তারা হলেন- দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, কার্যনির্বাহী সদস্য আখতারুজ্জামান।

দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন বৈঠক ও মতবিনিময় সভা করছেন। সে ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন নেতারা।

বিজ্ঞাপন

সভায় জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘গত একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ডাকসুর আসন্ন নির্বাচন জাতীর কাছে রাজনৈতিক আঙ্গিনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর গুরুত্বপূর্ণ বিধায় আমরা আপনাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছি। আমরা বিশ্বাস করি, গত ১০ বছর যাবত একটানা এবং গত সংসদ নির্বাচনে মানুষের বিপুল ভোটে জয়লাভ করার মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে যে পরিবর্তন এনেছেন, সেই পরিবর্তনের ভাগীদার হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমাজ। কাজেই তাদের দ্বারা আমরা নিগৃহীত হবো না। তাদের ভোট থেকে আমরা বঞ্চিত হবো না, এটা আমরা বিশ্বাস করি।’

এছাড়াও এরইমধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ডাকুস নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক ও মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। সেসব সভায় বিভিন্ন কৌশল ও নির্দেশনা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন নানক।

ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাবি ক্যাম্পাসে মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদলের আগমনের বিষয়টি তুলে ধরে নানক বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ঢাবিতে ছাত্রদলের আনাগানো শুরু হয়েছে। তারা মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষিত তফসিলকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রদল মূলত নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।’

মধুর ক্যান্টিনে যাওয়া ছাত্রদলের অনেকেই অছাত্র ছিলেন দাবি করে নানক বলেন, ‘কাজেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের অছাত্র ছাত্রনেতাদের উপস্থিতিতে আমরা আতঙ্কিত। যে অছাত্র নেতারা মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে বাগাড়ম্বর করছেন, আমরা এই বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারি না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অবকাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে, সেই পরিবর্তন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের মেয়াদে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘গত ১০ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুলি হয়নি, একটি বোমাও ফাটেনি। শিক্ষার একটি সুন্দর পরিবেশ বজায় ছিল। কাজেই সে বিষয়টি নিয়ে আমরা ছাত্রসমাজের কাছে যাবো, ছাত্রসমাজের কাছে ভোট চাইবো। আমরা যারা এখানে উপস্থিত হয়েছি, আমাদের সবার সঙ্গে সকলের যোগাযোগ রয়েছে। কারও স্থানীয়ভাবে যোগাযোগ রয়েছে তাই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গত পরশুদিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের কথা তুলে নানক বলেন, ‘সেই বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পাশাপাশি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনিবার্য বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ডাকসু নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট নেতাদের মধ্যে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আখতারুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে মঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, সুভাষ সিংহ রায়, বাহাদুর বেপারী, লিয়াকত শিকদার, সাইফুর রহমান সোহাগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, এবিএম রিয়াজুল কবির কাওসার, আনোয়ার হোসেন, গোলাম কিবরিয়া চিনু, মারুফা আকতার পপি, ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্যে মোশারফ হোসেন রাজা, বলরাম পোদ্দার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ অনেকে।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর