এলএনজি আমদানি ও বিক্রির অনুমতি পাচ্ছে বেসরকারি খাত
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:০০
।। হাসান আজাদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: বেসরকারি খাতে এলএনজি আমদানি ও সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রির অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে গ্রাহক ও সরবরাহকারী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করতে পারবে। তবে, এলএনজি সরবরাহে সরকারি পাইপলাইন ব্যবহার করতে হবে। এজন্য কোম্পানিগুলো সরকারকে নির্ধারিত সঞ্চালন ব্যয় বা হুইলিং চার্জ পরিশোধ করবে।
এছাড়া, এলএনজি আমদানি ও সরবরাহ তদারকি করতে সরকারের দুই প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ও পেট্রোবাংলা।
সম্প্রতি, সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এলএনজি আমদানি নীতিমালা-২০১৯’র খসড়া চূড়ান্ত করেছে। চূড়ান্ত খসড়ায় বেসরকারি খাতে এসব বলা হয়েছে। জ্বালানি বিভাগের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান। এই কর্মকর্তা জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রি নসরুল হামিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, এলএনজি উচ্চমূল্যের জ্বালানি। তাই, বেসরকারি কোম্পানিগুলো এই খাতে বিনিয়োগ করলে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। গ্রাহকরা ন্যায্য দামে কিনতে পারবে। তিনি বলেন, আমাদের গ্যাসের সংকট রয়েছে। তাই, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে এলএনজি আমদানি ও সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আমদানি করা উচ্চমূল্যের এলএনজি খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য সক্ষম যেকোনো বেসরকারি কোম্পানি এলএনজি আমদানি করে সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে পারবে এবং উভয়পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করতে পারবে। পাশাপাশি আমদানিকারক কোম্পানি পেট্রোবাংলার কাছেও বিক্রির প্রস্তাব দিতে পারবে। এক্ষেত্রে, পেট্রোবাংলা চাহিদার ২৫ শতাংশ এলএনজি বেসরকারি খাত থেকে কিনতে পারবে। এছাড়া, কোনো কোম্পানি নিজস্ব কাজে এলএনজি আমদানি করতে পারবে।
চূড়ান্ত খসড়া অনুযায়ী, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে মানসম্পন্ন এলএনজি আনতে হবে। পাশাপাশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতা, কারিগরি দক্ষতা ও মানবসম্পদের যোগ্যতার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হবে। আর পেট্রোবাংলার কাছে আমদানির অনুমতি (এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) প্রদান ও বাতিলের পুরো ক্ষমতা থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি এলএনজি বহনকারী জাহাজ, টার্মিনাল ও রি-গ্যাসিফিকেশন প্লান্ট তদারকি করবে।
খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, এলএনজি সরবরাহে সরকারি পাইপলাইন ব্যবহার করতে হবে। পাইলাইন ব্যবহারের জন্য সরকার নির্ধারিত হুইলিং চার্জ দিতে হবে। সকল আমদানিকারকের জন্য একই হুইলিং চার্জ নির্ধারিত হবে।
এদিকে, আগামি মার্চে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে গণশুনানি করবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিইআরসি। মূলত উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানির কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এর আগে, সরকারি বেসরকারি খাতে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে বাংলাদেশের সামিট ও ভারতের রিলায়েন্স গ্রুপকে অনুমতি দিয়েছে। সামিটের উৎপাদিত বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি ৫ দশমিক ৪৪৮৬ টাকা এবং রিলায়েন্সের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইউনিট প্রতি ৫ দশমিক ৮৪৯৮ টাকায় কিনবে সরকার।
সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম