ঢাকা-আবুধাবি সম্পর্কে যুক্ত হচ্ছে নতুন পালক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:৩৫
।। এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তার এই সফরেই দেশটির সঙ্গে প্রথমবারের মতো ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রম বাজারের দুয়ার উন্মুক্ত হতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে ঢাকা-আবুধাবি সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে, সম্পর্কের পালে যুক্ত হবে আরও একটি পালক।
একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম এশিয়ার তেল সমৃদ্ধ রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে দেশটির সঙ্গে প্রথমবারের মতো ফরেন অফিস কনসালটেশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আসন্ন সফরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়নোর পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহায়তা, বেসামরিক বিমান পরিবহন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একাধিক বিষয়ে আলাপ করবেন দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এছাড়া এই সফরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ইস্যুতে দুইটি সমাঝোতা স্মারক সই করা হবে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘আসন্ন সফরে দুই দেশের মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশন বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ, দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করা এবং সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করাই প্রধানমন্ত্রীর সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য।’
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমবাজারের দুয়ার উন্মুক্ত হতে পারে। যদি তাই হয়, তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রম বাজার। এর আগে ১৯ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। কিন্তু কিছু কারিগরি (দক্ষ ও টেকনিক্যাল) কর্মী ছাড়া মূলত ২০১২ সাল থেকে অন্য খাতের বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে দেশটিতে। বিগত ২০১২ সালের আগে দেশটিতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় আড়াই লাখ শ্রমিক কাজ করতে যেত। আশা করা হচ্ছে, এবারের সফরে সব ক্ষেত্রের কর্মী নিয়োগ বিষয়ে সুখবর আসবে।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসা ও প্রকৌশলসহ বেশকিছু খাতে বাংলাদেশি পেশাজীবীদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা উন্মুক্ত রয়েছে। গত বছর আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউএই সরকার ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আওতায় সে দেশে অবৈধ হয়ে পড়া প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে দেশটিতে বাংলাদেশিদের আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরিতে অবদান রাখবে বলে আশা করছি।’
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দিতে এখন জার্মানি সফর করছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা জার্মানি থেকে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সরাসরি সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবেন। আমিরাত সফর শেষে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর
ঢাকা-আবুধাবি সম্পর্ক বাংলাদেশ-আমিরাত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সংযুক্ত আরব আমিরাত