Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলা একাডেমির পর প্রেস ক্লাবে শ্রদ্ধায় সিক্ত আল মাহমুদ


১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:০২

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বাংলা একাডেমির পর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন কবি আল মাহমুদ।

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কবির মরদেহ নেওয়া হয় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে। সেখানে কবি, সাহিত্যিকসহ সর্বস্তরের মানুষ কবির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।

আরও পড়ুন- আল মাহমুদের জানাজা বাদ জোহর, বায়তুল মোকাররমে

আল মাহমুদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কবি জাকির আবু জাফর বলেন, আল মাহমুদ বাংলাদেশের গৌরব। তিনি সাহিত্যের সব ধারায় কাজ করেছেন। তিনি এ দেশের একজন বিশিষ্ট ও আধুনিক কবি। বাংলাদেশের সাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন যে স্বাধীনতা, সেটির পেছনে তার অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণযোগ্য। তার অনুপস্থিতিতে তার স্বপ্ন জারি থাকুক, এই সমাজকে নিয়ে দেখা তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক। যখন তার প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি, তখন তাকে আল্লাহ তায়ালা নিয়ে গেছেন। তিনি শ্রেষ্ঠতম স্থানটি পাক।

কবির মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানান গীতিকার ও সুরকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তিনি বলেন, আমরা শহীদ মিনারে কবির মরদেহ নিয়ে যেতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেয়নি। আমরা সব অপমানের জবাব দেবো। কিন্তু কিন্তু উনার সামনে এখন আমরা কটূ কথা বলব না।

সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ বলেন, আল মাহমুদ মূলধারার একজন অগ্রজ নাগরিক ছিলেন। তার প্রয়াণে বাংলা সাহিত্যে যে শূন্যতা তৈরি হলো, তা পূরণ হওয়ার নয়।

বিজ্ঞাপন

পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা এবং জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ (জাসাস) বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কবিকে শ্রদ্ধা জানান।

শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রেস ক্লাবে কবির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় কবির সন্তান মীর মোহাম্মদ মনির বলেন, বার্ধক্যজনিত কারণে বাবাকে ৯ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে যান। উনার ইচ্ছা ছিল শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করবেন। আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। বাবা নিজের অজান্তেও কোনো ভুল করে থাকলে সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনারা দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করেন।

এর আগে, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কবির মরদেহ নেওয়া হয় বাংলা একাডেমিতে। সেখানে একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী কবির মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে কবিকে নিয়ে আসা হয় প্রেস ক্লাবে। বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে কবির আরও একটি জানা অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন- আল মাহমুদের কবিতা: সময়ের কাছে মনীষার দান

এর আগে, শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৫ মিনিটে ধানমন্ডিতে ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ‘সোনালী কাবিন’খ্যাত আল মাহমুদ। শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

নিউমোনিয়া ও বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ৯ ফেব্রুয়ারি আল মাহমুদকে ধানমন্ডির শঙ্করের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকরা কবি আল মাহমুদকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়িতে ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে আল মাহমুদের প্রথম কবিতার বই ‘লোক লোকান্তর’ প্রকাশিত হয়। এরপর প্রকাশিত হয়, ‘কালের কলস’ ও ‘সোনালী কাবিন’। কবিতা ছাড়াও আল মাহমুদ লিখেছেন উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ ও আত্মজীবনী।

সারাবাংলা/ওএম/টিআর

আল মাহমুদ আল মাহমুদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা কবি আল মাহমুদ প্রেস ক্লাবে আল মাহমুদের মরদেহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর