সংশোধিত এডিপির আকার বাড়ছে
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:১৫
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বৈদেশিক অংশের বরাদ্দ কমলেও সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সরকারি তহবিল থেকে মোটা অংকের বরাদ্দ চাইছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। ফলে প্রাথমিক হিসেবে সংশোধিত এডিপির আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৪৫ কোটি টাকা। যা মূল এডিপিতে ছিল এক লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা।
তবে এখনও কোনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন।
রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিব বলেন, ‘এডিপি সংশোধনের কাজ চলছে। এখনো চূড়ান্ত হতে মাস খানেক সময় লাগতে পারে।’
একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সরকারি তহবিলের বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে সংশোধিত এডিপিতে ২৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে চাহিদা দেওয়া হয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা।
এছাড়া বৈদেশিক সহায়তার ক্ষেত্রে বরাদ্দ ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে চাহিদা দেওয়া হয়েছে ৫১ হাজার কোটি টাকা। স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে বরাদ্দ ছিল ৭ হাজার ৮৬৯ হাজার টাকা। সেখান থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে চাহিদা দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৮১১ কোটি টাকা
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক মহাপরিচালক মুস্তফা কে. মুজেরী সারাবাংলাকে বলেন, চলতি অর্থবছরের আগামী ৫ মাসে বেশি টাকা ব্যয় করতে পারবে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। হয়ত সে কারণে সরকারি তহবিলের অর্থ বরাদ্দের চাহিদা বেশি। অন্যদিকে সরকারি অর্থ খরচের ক্ষেত্রে জটিলতা কম। আবার বৈদেশিক অর্থ খরচের ক্ষেত্রে নানা নিয়মকানুন এবং প্রক্রিয়া থাকে। ফলে এই ঋণের অর্থ খরচ করার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম থাকে।
প্রস্তাবিত আরএডিপি পর্যালোচনা করে দেয়া গেছে, সরকারি খাতে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ পাঁচ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার বিভাগ চার হাজার ৬৯ কোটি টাকা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় দুই হাজার ৪৫৫ কোটি টাকায়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় দুই হাজার ৬২৪ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগ তিন হাজার ৮১৯ কোটি টাকা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দুই হাজার ২৯৬ কোটি টাকা এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় দুই হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ চেয়েছে।
অন্যদিকে সমাপ্তর জন্য নির্ধারিত প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে পরিকল্পনা কমিশন। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগের ৪৪৬টি প্রকল্প (বিনিয়োগ ৪৩০টি ও কারিগরি সহায়তা ১৬টি) সমাপ্তির সময় নির্ধারিত রয়েছে। নির্ধারিত এ সকল প্রকল্পের প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় বিভাগ, সেক্টর ডিভিশনের সমন্বয়ে গত বছরের ৩, ৫ ও ৬ ডিসেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার আলোচনা অনুযায়ী মোট ৩৪৮টি প্রকল্প নিশ্চিতভাবে ২০১৯ সালের জুনে সমাপ্ত করা সম্ভব হবে বলে মন্ত্রণালয় বিভাগ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান হতে জানানো হয়।
অন্যদিকে প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপিতে মোট ৩৪৪ (বিনিয়োগ ৩২৭, কারিগরি ১৭) টি প্রকল্প সমাপ্তির জন্য প্রস্তাব করা হচ্ছে। কাজেই নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পগুলো সমাপ্ত করে জনগণের কাছে প্রকল্পের সুফল পৌঁছাতে এ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সারাবাংলা/জেজে/এসএমএন