তিন ব্যাংকের অনুমোদন কীভাবে, ‘জানেন না’ অর্থমন্ত্রী
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:০০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নতুন তিন বেসরকারি ব্যাংক অনুমোদনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, তিনটি ব্যাংক সম্পর্কে আমাকে জানতে হবে, আরও জানা দরকার, আমি জানি না। আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর মহোদয় আছেন তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারব।’
সচিবালয় ক্রয় কমিটির বৈঠক শুরুর আগে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক কালকে ঘোষণা দিয়েছে। নিশ্চয় এর প্রয়োজনীয়তা আছে। প্রয়োজনীয়তা না থাকলে সেন্ট্রাল ব্যাংক ব্যাংক নিশ্চয় এমনটি করত না। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা করার অবকাশ রয়ে গেছে। তবে আমি আলাপ করে জানাব।
আগের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দেশে যে ব্যাংক আছে আমাদের আর নতুন কোনো ব্যাংকের দরকার হবে না। সাংবাদিকরা এ বিষয়টি উল্লেখ করলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশে কতগুলো ব্যাংক আছে এটি বড় বিষয় নয়। ব্যাংকগুলো যদি নিয়ম মেনে হলে, যে উদ্দেশ্যে ব্যাংক সেভাবে যদি চলে তাহলে তো সংখ্যা নিয়ে আমি চিন্তিত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আমরা কথাবার্তা বলছি, তাদের কিছু শর্ত দেওয়া হবে। আমাদের প্রধান বিষয় ক্লাসিফায়েড লোন। এই ক্লাসিফায়েড লোন থেকে আমরা কীভাবে অব্যাহতি পেতে পারি সে বিষয়ে কথা বলব। ব্যাংকগুলোতে ইন্টারেস্ট কমাতে হবে। ক্লাসিফায়েড লোনগুলোয় হাত দিতে হবে।’
ব্যাংকের আমানত ৪০০ কোটি টাকার পরিবর্তে ৫০০ কোটি টাকা হয়েছে সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেফটি রেট বড় হয়েছে। সেটি আরও ভাল খবর।’
আরও পড়ুন: অনুমোদন পেল নতুন তিন ব্যাংক
উল্লেখ্য, বেসরকারি খাতে নতুন করে আরও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক তিনটি হলো: বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক ও পিপলস ব্যাংক।
নতুন অনুমোদন পাওয়া বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জসীম উদ্দিন। তিনি বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়া ব্যাংকটির পরিচালক হিসেবে রয়েছেন জসীম উদ্দিনে ভাই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলম। সিটিজেন ব্যাংকের প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক। আর পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এম এ কাশেমকে।
বর্তমানে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা ৫৯। এর মধ্যে ৪১টি বেসরকারি খাতের, ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও ৯টি বিদেশি মালিকানার ব্যাংক ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নতুন তিনটি ক্যাংক যথাক্রমে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক ও পিপলস ব্যাংক এই তিনটি ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার ফলে বর্তমানে দেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল ৬২টি।
টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মেয়াদে ২০০৯ সালে নয়টি নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়। পরবর্তী সময়ে ‘সীমান্ত ব্যাংক’ নামের আরেকটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়।
সর্বশেষ গত জুলাই মাসে বিশেষায়িত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে বাণিজ্যিক লেনদেনের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন ব্যাংকগুলোর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা খুবই নাজুক।
সারাবাংলা/এইচএ/একে