‘শাজাহান খানের বিরোধিতা কেউ করেননি’
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:১৪
।। স্পেশাল করেসপেন্ডন্ট ।।
সংসদ ভবন থেকে: সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ প্রণয়নে গঠিত কমিটির প্রধান হিসেবে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নাম প্রস্তাব করার পর কেউ বিরোধিতা করেননি বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য শাজাহান খানকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের এই কমিটি করা হয়েছে। রোববারের বৈঠকে যখন শাজাহান খানের নাম প্রস্তাব করা হয়, তখন কেউ কিন্তু বিরোধিতা করেননি। তার নেতৃত্বে আরও ১৪ জন সদস্য রয়েছেন। এখানে ব্যক্তি কোনো বিষয় নয়।
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ওই কমিটির প্রধান হিসেবে শাজাহান খানকে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তার জবাবে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন- ‘ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন হবে মেট্রোরেলে’
এদিন সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম সম্পূরক প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, বদিকে (সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি) দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ, শাজাহান খানকে দিয়ে সড়ক নিয়ন্ত্রণ? এই শাজাহান খানের একটা হাসি নিয়ে কত কিছু ঘটল! সেই শাজাহান খানকে প্রধান করে গঠিত কমিটি সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কতটা সক্ষম হবে?
এই প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, অতীতে কোনো ব্যক্তির কারণে কোনো সমস্যার উদ্ভব হয়েছে কি না, সেটা আমি দেখব না। আমি দেখব, সড়কে শৃঙ্খলা আনতে ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কমিটি কী সুপারিশ তৈরি করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করব।
এ সময় প্রশ্নকারী ফখরুল ইমামের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেখুন, আপনি যতটুকু আশা করছেন তার চেয়েও ভালো রিপোর্ট আসতে পারে।
পরে শাজাহান খান ২৭৪ বিধিতে ব্যক্তিগত কৈফিয়ত দিতে গিয়ে ফখরুল ইমসামের প্রশ্নের তীব্র প্রতিবাদ জানান ও বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এদিকে, প্রশ্নোত্তরে সম্পূরক প্রশ্ন করতে গিয়ে সরকার দলীয় এমপি এ কে এম শামীম ওসমান ফখরুল ইমামের প্রশ্নকে ব্যক্তি আক্রমণের সামিল বলে উল্লেখ করেন। এর প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, শাজাহান খান একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার হাসির জন্য ঘটনা ঘটেছে নাকি পরিকল্পিতভাবে ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, সেটা দেখার বিষয়। তবে এভাবে প্রশ্ন করা ঠিক হয়নি।
পরে সরকারি দলের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখরের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ডিভাইডারই একমাত্র সমাধান নয়। এখানে চালক, পথচারী ও যাত্রীদের সচেতনতাও জরুরি। কারণ রাস্তায় দেখা যায় ফুট ওভারব্রিজ থাকার পরও ডিভাইডার দিয়ে লাফ দিয়ে মানুষ রাস্তা পার হচ্ছেন। মহিলারা বাচ্চা কোলে নিয়ে রাস্তা পার হয়। এমনকি ফ্লাইওভারের এপাশ থেকে ওপাশে হামাগুড়ি দিয়ে মানুষ পার হচ্ছে। মানুষ সড়কে শৃঙ্খলা মানছে না। মানুষের বিবেকটা এখানে খুব জরুরি। সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি কমিটিও করা হয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্য যারা ঢাকার রাস্তায় চলাচল করেন, তারা দেখবেন— মানুষ মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছেন। এর মধ্যে গাড়ি এসে চাকায় পিষ্ট করে দিচ্ছে। এখানে কি শুধু চালককে দায়ী করবেন? অনেক গাড়িচালক ট্রাফিক সিগন্যাল মানেন না। ভিআইপি হয়ে অনেকে রং সাইডে গাড়ি নিয়ে যান। এটা ঠিক নয়। ভিআইপিরা তো অসাধারণ, তারা যদি রং সাইডে চলেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কেন রং সাইডে যাবে না!
মন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সব মহাসড়কে ফোর লেনের পাশাপাশি বাইলেন ও ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে। সড়ক মন্ত্রণালয় সেভাবেই কাজ করছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান সড়ক দুর্ঘটনা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ প্রণয়নে গঠিত কমিটি