Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যুক্তরাজ্যে ফিরতে কারাবরণেও প্রস্তুত ‘জিহাদি ব্রাইড’ শামিমা


১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:৪০

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

চার বছর আগে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দিতে যুক্তরাজ্য ছেড়ে পালিয়েছিলেন শামিমা বেগম। সেখানে ‘জিহাদি ব্রাইডে’ পরিণত হওয়া শামিমা এখন খিলাফত ভেঙে পড়ায় দেশে ফিরতে চান। আর এর জন্য প্রয়োজনে কারাগারে যেতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের এই মনোবাসনার কথা জানিয়েছেন শামিমা। তবে এরই মধ্যে তিনি একটি সন্তানেরও জন্ম দিয়েছেন। আর তার নাম রেখেছেন ইসলামি যোদ্ধা জেরাহ’র নামে।

বিবিসি ও স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শামিমা জানান, ম্যানচেস্টার অ্যারেনার বোমা হামলাকে সিরিয়ায় চালানো হামলার যথোপযুক্ত প্রতিশোধ বলে মনে করেন তিনি। ব্রিটিশ সেনাদের হত্যার ঘটনাগুলোকে আইএসের সঙ্গে যুদ্ধের প্রতিশোধ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শামিমা বলেন, তিনি আইএসের পোস্টার গার্ল ছিলেন। দলটির প্রতি এখনও তার সহানুভূতি কাজ করে। তবে এখন তিনি ফিরতে চান নিজের দেশ যুক্তরাজ্যে। তার জন্য কারাগারে যেতে হলেও আপত্তি নেই তার।

বিবিসি’র পক্ষ থেকে শামিমার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন গণমাধ্যমটির মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি কুয়েন্টিন সমারভিল। তিনি এক টুইটে লিখেছেন, সাক্ষাৎকারে শামিমা স্বীকার করে নিয়েছেন, তিনি আইএসকে সমর্থন করতেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তিনি ভেবেছিলেন, তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজেরই নেওয়ার ক্ষমতা ছিল। আর সেই ভাবনা থেকেই তিনি আইএসে যোগ দেন। সংগঠনটির পোস্টার গার্লও হন তিনি।

তবে এখন আইএসে থাকার আর কোনো প্রয়োজন মনে করছেন না শামিমা। সমারভিল আরেক টুইটে জানান, আইএসের প্রতি শামিমার এখনও সহানুভূতি রয়েছে। তবে আইএসে যোগ দেওয়ায় তিনি ব্রিটেনের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এখন তিনি কারাবরণ করে হলেও ব্রিটেনে ফিরতে প্রস্তুত।

বিজ্ঞাপন

শামিমা নিজে তার আইএসে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, আমি পরিবার তৈরি করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তখনও আমি বুঝিনি যে আদতে তারা কী করছে। তাদের অপপ্রচারমূলক ভিডিওগুলোর বাইরে তারা কী করে, সে সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না। তবে সেখানে গিয়ে আমি সব বুঝতে পেরেছি। আর সেখানে যাওয়ার জন্য আমি অনুতপ্ত। আমার মাধ্যমে যারা আইএসের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রেরণা পেয়েছে, তাদের জন্যও আমি অনুতপ্ত।

সাক্ষাৎকারে শামিমা স্বীকার করেছেন, তিনি আইএসকে সহায়তা করেছেন ও তাদের পোস্টার গার্ল হিসেবে কাজ করেছেন। কিন্তু তাদের গুলির জন্য অর্থায়ন করেননি তিনি। আর খবরের কাগজেও আসতে চাননি বলে তিনি জানান।

সাক্ষাৎকারে শামিমা জানান, তার প্রথম সন্তানটি মারা গেছে। তিনি চেয়েছিলেন, প্রথম সেই সন্তানটি হোক আইএস যোদ্ধা। তবে তার দ্বিতীয় সন্তানটি ব্রিটিশ নাগরিক হোক— এখন এমনটিই চান তিনি।

বিবিসি বলছে, শামিমাকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনতে একজন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে তার পরিবার। ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, শামিমা এক ডাচ নাগরিককে বিয়ে করেছিলেন। এটি শামিমার বানানো তথ্য নয়, তার মা-বাবা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, শামিমা ব্রিটেনে ফিরে আসতে চেয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাইলেও অনেকেই বলছেন, শামিমার যতটা অনুতপ্ত হওয়া উচিত ততটা অনুততপ্ত তিনি হননি। যদিও তার আইনজীবী তাসনিম আখুনজি বলছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কারও কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়াই স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, সিরিয়ার অভিজ্ঞতা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। আর সাক্ষাৎকারে তার আবেগের অভাব অনেকটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ফেরত সেনাদের সঙ্গে তুলনীয়।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিন ব্রিটিশ তরুণী আইএসে যোগ দিতে তুরস্ক হয়ে সিরিয়া চলে যায়। তাদেরই একজন শামিমা, যিনি এখন তার সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে ফেরত আসার সুযোগ চেয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শামিমার সঙ্গে পলাতক আরেক এক তরুণী আমিরা আবাস রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছেন, তিনি জানতেন না যে শামিমা বেঁচে আছেন। আরেক তরুণী খাদিজা সুলতানার ধারণা ছিল, শামিমা ও আমিরা দু’জনেই মারা গেছেন।

সারাবাংলা/আরএ/টিআর

আইএস যুক্তরাজ্য শামিমা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর