দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর সোয়া এক কিলোমিটার
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:০১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: পদ্মা সেতুতে বসেছে অষ্টম স্প্যান। দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় সেতুর ৩৫ এবং ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর অষ্টম স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়েছে। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো সেতুর ১২শ মিটার বা সোয়া এক কিলোমিটার।
এর আগে সকালে ঘন কুয়াশার কারণে স্প্যানটি উঠাতে খানিকটা দেরি হয়। পরে বেলা পৌঁনে ১১টার দিকে শুরু হয় স্প্যান তোলার কাজ। এরপর বাকি থাকবে আরো ৩৩ টি স্প্যান।
এর আগে মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্প্যানটি পদ্মা সেতু থেকে সাত কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রবল বর্ষায় ক্রেনের চলাচলের বিষয়টি ধারণা নিতে এটা করা হয়।
পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে মাওয়া থেকে স্প্যানটি ৩ হাজার ৬০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্রেনে তুলে জাজিরা প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জাজিরা প্রান্তে সেতুর শেষ পিলার ৪২ থেকে ৩৬ নম্বর পিলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬টি স্প্যান বসানো হয়েছে। আর মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে একটি স্প্যান বসানো হয়েছে।
চার বছর আগে বছর আগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল। ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো গত বছরের ডিসেম্বরে। তবে প্রকৃতির প্রতিকূলতায় ২০২০ সালের শেষে যান চলাচলের জন্য খুলবে পদ্মা সেতু। এর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে পানির ওপর ও নিচের পাইল বসানো পুরোপুরি শেষ হয়েছে ১৮৮টির। শুধুমাত্র পাইলের নিচের অংশ বসানো শেষ হয়েছে ১১টির। আর ২২০টি পাইল বানানো শেষ হয়েছে। এছাড়া পিয়ারের পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হয়েছে ১৫টি।
অন্যদিকে, স্প্যান বসানো হয়েছে ৭টি, বাকি আছে ৩৪টি। মোট ৪১টি স্প্যান এবং ৪২ খুঁটিতে পূর্ণরূপ পাবে ৬ কিলোমিটারের বেশি লম্বা এই পদ্মা সেতু।
এরমধ্যে যেসব পিয়ারে ৬টি করে পাইল বসছে সেগুলো হলো- পি২-পি৫, পি১৩-পি১৪, পি১৬-পি১৮, পি২০-পি২৩, পি৩৭-পি-৪১, এবং যেসব পিয়ারে ৭টি করে পাইল বসছে সেগুলো হলো- পি৬-পি১২, পি১৫, পি১৯, পি২৪-পি৩৬। তবে এখনও স্কিন গ্রাউটেডে ৭৭টি পাইল বসানোর কাজ বাকি রয়েছে।
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। প্রকল্পের বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণের দায়িত্বে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সারাবাংলা/এসএ/জেএএম