একুশের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম শহিদ মিনার লোকে লোকারণ্য
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরীর আপামর মানুষ এক স্রোতে মিশে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি, যারা প্রাণের ভাষা বাংলার জন্য রাজপথে ঢেলে দিয়েছিলেন নিজের রক্ত। রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারি সবাই মিলেছেন এক মোহনায়, চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে।
বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে একুশের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম শহিদ মিনারে বিপুল সংখ্যক মানুষ সমবেত হন। শিশু, নারী, বৃদ্ধ অনেকেই এসেছিলেন। কেউ এসেছেন ব্যানার-পুষ্পস্তবক নিয়ে, কারও বুকের কাছে ধরে রাখা লাল টকটকে গোলাপ। সব মিলিয়ে রাত ১২টা বাজতে না বাজতেই শহিদ মিনার এবং আশপাশের এলাকা হয়ে উঠে লোকে লোকারণ্য।
রাত ১২টা ১ মিনিটে নগরীর নন্দনকানন ফায়ার স্টেশন থেকে বেজে ওঠে সময়ের ঘণ্টা। এর আগেই চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় শুরু হয় শহিদ দিবস পালনের আনুষ্ঠানিকতা। নগর পুলিশের একটি চৌকস দল সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মূল পর্বের সূচনা ঘটান।
সাবেক মন্ত্রী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং রেল মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন কাউন্সিলর এবং সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে শহিদ মিনারে ফুল দেন।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামও নির্বাচিত সদস্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে শহিদ মিনারে যান। কর্মকর্তা- কর্মচারিদের নিয়ে ফুল দিয়েছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো.আব্দুল মান্নান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সিএমপি কমিশনার মো.মাহাবুবর রহমান, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূর ই আলম মিনা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো.ইলিয়াস হোসেনও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমান্ডের নেতারা শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। তাদের সঙ্গে ছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও শহিদ মিনারে ফুল দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) এবং চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নেতারাও ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ, শিল্প পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), শিল্প পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও ফুল দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র, কাস্টমস, ফায়ার সার্ভিস, রেলওয়ে পুলিশ, আরআরএফ কমান্ড্যান্ট, আনসার ও ভিডিপি, বন বিভাগ, সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, বিআইডব্লিউটিসি, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড, ইউএসটিসি’র পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে ফুল দেওয়া হয়।
ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, নগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ, সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ, হকার্স লীগের নেতারাও শহিদ মিনারে ফুল দিয়েছেন।
শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশন, সম্মিলিত পোশাক শ্রমিক ফেডারেশনসহ কয়েক’শ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
পুস্পস্তবক অর্পণের পুরোটা সময়ই শহিদ মিনারে আসা বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী, সাধারণ মানুষ শ্লোগানে শ্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে রাখেন।
নগর পুলিশের পক্ষ থেকে শহিদ মিনার ঘিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। যানবাহন চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়।
সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন