স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ছাত্রলীগের যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং তিন দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন ও মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার সকালে ঢাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেয়। পরে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবীবা বেনজীর সারাবাংলাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেওয়ার পরও আমাদের কোনও দাবি এখনও মেনে নেয়নি। আমরা রবিবার পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষকে সময় দিয়েছি। এরপর আমাদের দাবির পক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ না দেখলে সোমবার থেকে টানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের না নিয়েই সহকারী প্রক্টর মাসুদুর রহমান ও লুৎফর রহমান, অধ্যাপক জিনাত হুদা ও চন্দ্রনা পোদ্দারকে নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, ছাত্রলীগের যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কর্মসূচি দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে বসে আন্দোলন করতে থাকে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে আন্দোলনে থাকা নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। মশিউর নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রকে তুলে নিয়ে মারধরও করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধু হল শাখার সভাপতি আল-আমিন, ছাত্রলীগ নেতা মেহেদি হাসান সানি, সোহানুর রহমান, গোলাম সারোয়ার, লিপি আক্তার, বেনজির হোসেন নিশি, তন্নী ও শ্রাবণী শায়লা মোট আট জন যৌন নিপীড়ন করে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। কিন্তু প্রক্টরকে বিষয়টি জানানোর পরও কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
গত বুধবার(১৭ জানুয়ারি) যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে বেলা ১১টার দিকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে আসে। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। তাদের দেখে প্রক্টর কার্যালয়ের কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা গেট ভেঙে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীকে তার কার্যালয়ের সামনে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এ সময় তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- যৌন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের তাৎক্ষণিক সাময়িক বহিষ্কার করা, তদন্ত কমিটিতে ছাত্রদের দুইজন প্রতিনিধি রাখা এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা।
অবরুদ্ধ থাকার একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রক্টর গোলাম রব্বানী। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধরা প্রক্টরের আশ্বাস মানেননি। ফলে প্রক্টর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কাছে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান এসে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
সারাবাংলা/এসআর/টিএম/এনএস