জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শহিদ দিবস উদযাপন
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৭
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর যৌথ উদ্যোগে পালিত হলো শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।
বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহর পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠান।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।
এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। একুশের কবিতা আবৃত্তি, গান, গানের সঙ্গে একক ও দলীয় নাচ এবং সমবেত সঙ্গীত দিয়ে সাজানো সাংস্কৃতিক পর্বটি পরিচালনা করেন নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশের খ্যাতনামা নাট্যশিল্পী টনি ডায়েস এবং তার স্ত্রী প্রিয়া ডায়েস।
সাংস্কৃতিক পর্ব শেষে রাত ১০টায় শুরু হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
জাতিসংঘে ইন্টারপার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) এর বার্ষিক শুনানিতে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্ক সফররত বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ডা. এ এফ এম রুহুল হক, মো. আবু জহির, বেনজীর আহমেদ এবং আহসান আদেলুর রহমান অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাঙালির উপস্থিতিতে নিউইয়র্ক সময় ২১শে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে মিশনের অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জাতিসংঘ মিশন ও কনসাল জেনারেলের পর একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জাতীয় পার্টি, যুক্তরাষ্ট্র সেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, যুব লীগ, ছাত্র লীগ, নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল ও সোনালী এক্সচেঞ্জসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
স্বাগত ভাষণে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বিশ্বসভায় বাঙালি জাতির ভাষা বাংলা প্রথম উচ্চারিত হয় ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতির পিতার প্রথম বাংলায় ভাষণের মধ্য দিয়ে। জাতির পিতার পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দিয়ে যাচ্ছেন যারফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উচ্চকিত হচ্ছে বাংলা ভাষা।’
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, ‘তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী ঢাকায় ভাষার জন্য শহিদ হওয়ার মতো পৃথিবীর একমাত্র ঘটনা স্বীকৃতি পায় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। ভাষা শহীদদের এই আত্মত্যাগ বিশ্ববাসীকে একটি দিন উপহার দিতে পেরেছে, এর থেকে গর্বের বিষয় বাঙালিদের জন্য আর কী হতে পারে?’
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ধারায় একুশের চেতনা সম্পৃক্ত করতে কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আগামী ২২শে ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এবং কুইন্স লাইব্রেরির যৌথ আয়োজনে নিউইয়র্কের ফ্লাশিং-এ বহভাষা ও বহুসংস্কৃতির আবহে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে যা প্রবাসী বাঙালিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষকে একুশের চেতনাতলে আবদ্ধ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’
আরও বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, উপদেষ্টা মাসুদুল হাসান, মুক্তিযোদ্ধা মুকিত চৌধুরী ও যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সেক্রেটারি আবু তালেব চান্দুসহ যুক্তরাষ্ট্র সেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, যুব লীগ, ছাত্র লীগ, নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ ও সোনালী এক্সচেঞ্জ যুক্তরাষ্ট্র শাখার প্রতিনিধিসহ প্রবাসী বাঙালি নেতারা।
সারাবাংলা/এসএমএন