‘নিমতলীর ঘটনার ঘাটতি পূরণে এবার আটঘাট বেঁধে নেমেছে সরকার’
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৪৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা আবাসিক এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে ঘাটতি ছিল চকবাজারের ঘটনার পর তা পূরণে সরকার এবার আটঘাট বেঁধে নেমেছে।
শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষনিক খোঁজখবর নিচ্ছেন, সব ধরণের লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছেন। এই পর্যন্ত কোনও ব্যপারে কোনও গাফলতি, কোনও অবহেলা হয়নি। সরকার সব ধরনের সহযোগিতা ও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। নিখোঁজদের খুঁজে বের করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। ঘটনার তদন্তের কাজ শেষ হলে এরপর প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দূর্ঘটনার তিন দিন পার হলেও ওই এলাকা থেকে রাসায়নিক পদার্তের গোডাউন কেন সরানো হয়নি জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নির্দেশনা একটাই, ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ কেমিক্যালের রাসায়নিকের যে সকল গুদাম রয়েছে, এই অবকাঠামোগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্ট্যান্ডিং নির্দেশনা রয়েছে। সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে।’
ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন এলাকাটা এই ঘটনার পর যে অবস্থা বিরাজ করছে সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই ব্যবস্থা নিতে হবে। সাময়িক একটা ব্যবস্থা নিলেই এর কোন সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটা সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন অনিরাপদ ঝুঁকিপূর্ণ এবং অবৈধ রাসায়নিক যে অবকাঠামো আছে, তা এখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এই ব্যপারে কোনও আপোষ নেই।’
‘এখনকার কাজটা হলো, যারা নিহত হয়েছে তাদের লাশটা উদ্ধার করে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। অনেকে বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এরপরের কাজ হচ্ছে যারা মিসিং, খোজ পাওয়া যাচ্ছে না সেই মিসিং ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা। এই কাজগুলো শেষ হলে অন্যান্য কাজে হাত দিতে হবে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
২০১০ সালে নিমতলীর ঘটনার পরও পুরান ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন সরানোর ক্ষেত্রে সরকারের কোনও ব্যর্থতা আছে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সমন্বয়ের যতটুকু অভাব ছিল সেই ঘাটতিগুলো পূরণের জন্য সরকার আটঘাট বেঁধে নেমেছে। অতীতের ভুল ত্রুটির সংশোধন করে নতুন করে যাত্রা শুরু হবে, যাতে করে এই এলাকাটিতে অনিরাপদ রাসায়নিক অবকাঠামোগত নিরাপত্তাহীনতার অবসান ঘটে।’
এর জন্য যা যা করনীয় তার জন্য সরকারে সমন্বিত পদক্ষেপ নেবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপাতত এই এলাকা বলতে চকবাজার ও আশপাশের এলাকায় যে সকল হাজার হাজার রাসায়নিক অবৈধ অবকাঠামো, এগুলোর অপসারণ করতেই হবে।’
কেমিক্যাল গোডাউন সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিকল্প কোনও করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিকল্প চিন্তা ভাবনা চলছে। এখানের ঘনবসতি পূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকা, এখানে কেমিখ্যালের গোডাউন থাকাটা নিরাপদ নয়। এখান থেকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়াটাও আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়বে। সরকারের বিকল্প চিন্তা ভাবনা চলছে।’
সারাবাংলা/এমএমএইচ/এসএমএন