টরন্টোতে বিডিআর শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশি কমিউনিটি
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:০৩
।। ইমামুল হক, কানাডা থেকে ।।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর হত্যাযজ্ঞে হারানো সকল সূর্যসন্তানদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে টরোন্টো প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কানাডা টরেন্টোতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের উদযাপনের মধ্য দিয়ে বিডিআর শহীদদের স্মরণ করা হয়।
এদিন কর্নেল মুজিব ট্রাস্ট, অন্য থিয়েটার, অন্যস্বর, রেডিও মেট্রো মেইল, বাচনিক, টুলু অ্যান্ড দি লাইটম্যান, চন্দন অ্যান্ড ফ্রেন্ডস, টরন্টো থিয়েটার ফোকসসহ কমিউনিটি গ্রুপ এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। শ্রদ্ধার্ঘ্যের এই বিশেষ অনুষ্ঠান ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’ টরন্টো শহর থেকে ওই দিন স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ফেসবুকে সরাসরি প্রচার করা হয়।
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় এই ঘটনার মধ্য দিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসের নৃশংসতম দেশমাতৃকার সেবায় অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে শহীদ হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা। ওই ঘটনায় সর্বমোট ৭৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়। ওই দিন মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এত অধিকসংখ্যক উচ্চ প্রশিক্ষিত মেধাবী সেনা কর্মকর্তার হত্যার ঘটনা সাম্প্রতিক ইতিহাসে আর একটিও নেই।
অনুষ্ঠান শুরুতেই বিডিআর হত্যাযজ্ঞে শহীদ সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত সবাইকে স্মরণকরে শহীদদের নাম উচ্চারণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে শহীদ সেনাকর্মকর্তাদের স্বজন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্মৃতিচারণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন রেডিও মেট্রো মেইলের সানজানা জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায়। বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী আশিকুজামান টুলু, সংগীত শিল্পী উইনিং-এর চন্দন, এবং নওশীন কিবরিয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ সঙ্গীত পরিবেশনা করেন। আবৃতিকার আহমেদ হোসেন এবং মেরি রাশেদীন বিশেষ দুটো আবৃতি করে শহীদদের স্মরণ করেন। আশিকুজ্জামান টুলুর কম্পোসিশনে শহীদদের উদ্দেশ্যে ইমামুল হকের লেখা একটি বিশেষ গান পরিবেশন করেন নওশীন কিবরিয়া।
এছাড়া শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে ইমামুল হক, শহীদ কর্নেল মুজিবের ছোট ভাই ও জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা, বলেন, ‘প্রতি বছর এই শহরে আমরা এই দিনটি পালন করি, স্মরণ করি আমাদের হারানো বীর শহিদদের এবং ধিক্কার জানাই সেইসব নরপশুদের যারা জাতিকে সেদিন অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিলো এবং আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ৫৭ জন বীর সেনানীকে ।
তিনি ২৫ ফেব্রুয়ারিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালনের জন্যেও সরকারের প্রতি দাবি জানান।
উপস্থিত শিল্পীরা বলেন, জীবদ্দশায় আমাদের হারানো শহীদ সেনা কর্মকর্তারা নানা উপলক্ষে দেশে-বিদেশে তারা আমাদের দেশকে গর্বিত করে গেছেন, তারা তাদের বিক্রম দেখিয়েছেন, মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন, সহকর্মীদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।
প্রতি বছর বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করতে, জাতিকে গৌরবোজ্জ্বল করতে এবং শহীদদের জীবন উৎসর্গের প্রতীকী রূপকে কর্নেল মুজিব ট্রাস্ট ও তার সহযোগী সংগঠন উপস্থাপন করেন।
সারাবাংলা/এআই/এমআই