Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাবাকে ভীষণ মিস করি’


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:৪৫

।। সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

‘ কখনও বাবাকে দেখিনি। বাবার ছবি দেখিয়ে মা বলে- বাবা অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। বাবাকে নিয়ে অনেক গল্প বলে মা। বাবা নাকি দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। আমি তো বাবাকে দেখিনি। বাবা থাকলে খুব ভাল লাগতো। বন্ধুরা ওদের বাবার সাথে স্কুলে আসে। আমারও বাবার হাত ধরে স্কুল যেতে ইচ্ছে করে। বাবাকে ভীষণ মিস করি। প্রতিবছর এইদিনে আমি, মা আর দাদুরা বাবার কবরে এসে দোয়া করি।’

সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল আটটায় রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে মা -দাদা-দাদী আর ফুফুদের সঙ্গে  আসে ১০ বছরের সাদাকাত সাবরি বিন মোমিন। এসময় সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের কাছে বাবা সম্পর্কে কথাগুলো বলছিলো সাদাকাত।

এসময় তার পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন দাদা-ফফুরা। কাঁদছিলেন মা সানজানা সনিয়া জোবায়দা। তিনি  সারাবাংলাকে বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় শহীদ হন সাদাকাতের বাবা  মেজর মুমিনুল ইসলাম সরকার। তার মৃত্যুর ১১ দিন পর  আমাদের একমাত্র সন্তান সাদাকাতের জন্ম। আমাদের  বিয়ের ৭ বছর পর ওর জন্ম।  কিন্তু দুর্ভাগ্য সে তার বাবাকে দেখেনি, তার বাবাও সন্তানের মুখটা দেখতে পারেননি। আমাদের সঙ্গে যে নিষ্ঠুরতা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট মনে আছে। এখন সবকিছু ভুলে একমাত্র ছেলেকে আঁকড়ে বেঁচে আছি।

তিনি বলেন, আমার সন্তান আজও জানে না বাবা কেমন হয়। ও এখন ক্লাস থ্রি তে পড়ছে। মাঝেমধ্যেই বাবার সম্পর্কে নানান কথা জিজ্ঞেস করে।আমাদের যে ক্ষতি আর শূন্যতা তা কোন কিছুর বিনিময়েই পূরণ হবার নয়। এ ঘটনায় জড়িতদের সাজা খুব দ্রুত কার্যকরের দাবীও জানান সানজানা।

শহীদ মেজর মমিনুলের মেজো বোন জেবুন্নেসা সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ভাই তো চলে গেলেন। কিন্তু তার সন্তানকে জেনো তার মতো মানুষ করতে পারি আমাদের এখন সেই চেষ্টা। আমরা যতই আদর সোহাগ দেই না কেন-তার বাবার অনুপস্থিতি তো পূরণ হবার নয়। তবে এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া আর কোনো চাওয়া নেয় আমাদের।

আরও পড়ুন: পিলখানা হত্যা: পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষা, ঝুলে আছে বিস্ফোরক মামলা

শহীদ মেজর মমিনুলের পরিবারের মত আরও অনেক শহীদ পরিবারের স্বজনরা সোমবার সকালে বনানী কবরস্থানে আসেন।

কারও বাবা-মা, কারও সন্তান, কারও স্ত্রী বা ভাই-বোন। এসময় পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সন্তানের জন্য মুনাজাত ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বৃদ্ধ অনেক বাবা-মা। কেউ আবার প্রিয়জনের কবরে ফুল দিয়ে দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন অনেকটা সময়।

সারাবাংলা/এসএইচ/জেডএফ

পিলখানা হত্যাকাণ্ড শহীদ স্বজন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর