কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে টাস্কফোর্স মাঠে নামছে ২৮ ফেব্রুয়ারি
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:৫৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন সরিয়ে ফেলতে সিটি করপোরেশন গঠিত টাস্কফোর্স আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠে নামছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. সাঈদ খোকন।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এক সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুই স্তর বিশিষ্ট টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রথম স্তরটি উচ্চ কক্ষ বিশিষ্ট এবং দ্বিতীয় স্তরটি মাঠ পর্যায়ের। প্রথম স্তর থাকবে পরিকল্পনা প্রণয়নে সকল সংস্থার প্রধানরা। আর দ্বিতীয় স্তরে থাকবে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংস্থার প্রতিনিধিরা যেমন ম্যাজিস্ট্রেট, ওসি, কমিশনার, ব্যবসায়ী প্রমুখ।
মেয়র বলেন, টাস্কফোর্সে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে বেশ কয়েকজন। তাদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হবে। সকল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সাথে থাকবে। যে বাসাতেই কেমিক্যাল গোডাউন পাওয়া যাবে সেই বাসারই বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৫টি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ যেগুলো সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শহরের মানুষকে নিশ্চিত করতে চাই যে, আরেকটা চকবাজার হতে দেওয়া হবে না। আগামী এক মাসের মধ্যে পুরান ঢাকাকে বাসযোগ্য হিসেবে গড়তে চাই। এজন্য সকল গোয়েন্দা সংস্থাকে পুরান ঢাকার পুরো এলাকাকে সার্ভিলেন্সের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন।
আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি বলেন, চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত সিরিয়াস। তিন পদ্ধতিতে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন সরানো হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশ এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। এসবিকেও মাঠে নামতে নির্দেশনা দেন আইজিপি। তিনি বলেন, সকলকে এবার আটঘাট বেধে নামতে হবে। কোন বাসায় কি আছে তা চেক করেন। ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ছাড় দেবোও না। এক মাসের মধ্যে পুরান ঢাকাকে বাসযোগ্য করে দেব।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যেকোনো মূল্যে পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করতে হবে। আপনারা ব্যবসায়ী হিসেবে কথা বলবেন না। নাগরিক হিসেবে কথা বলবেন। আপনারা কিভাবে সরাবেন তার করণীয় ঠিক করেন। নাহলে আমাদের অভিযান চালানো ছাড়া কিছুই করার নেই। আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে দেখবো না। আর প্রাণহানি দেখতে চাই না। এই এলাকাকে বাসযোগ্য করা হবে।
সমন্বয় সভায় সকল গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন। তারা বলেন, কেমিক্যাল গোডাউন ঘিঞ্জি পরিবেশে করার কারণে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে যায়। তাছাড়া আগুন যেখানে সেখানে লাগতেই পারে। পুরান ঢাকার রাস্তা বড় করারও পরামর্শ দেন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
সভায় কেমিক্যাল ব্যবসার বিভিন্ন ব্যবসায়ীরাও কথা বলেন। তাদের মতে, স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর পরামর্শ দেন। কোনো ব্যবসায়ীকে যাতে হয়রানি করা না হয়। কেমিক্যাল পল্লীর জন্য জমি বরাদ্দের কথা বলা হলেও গত ১০ বছরে কেন হলো না তার বাস্তবায়ন চান ব্যবসায়ীরা।
সারাবাংলা/ইউজে/এনএইচ