Tuesday 19 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘৩ তলার ফাউন্ডেশনে ৫ তলা বিল্ডিং, হেলে তো পড়বেই’


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:০৮

।। সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: ‘তিন তলার ফাউন্ডেশনে পাঁচ তলা বিল্ডিং বানাইছে। রড-সিমেন্টের পরিমাণও কম। এই বিল্ডিং তো হেলে পড়বেই। আল্লাহ বাঁচাইছে, বাসার সব মানুষ নিরাপদে সরতে পারছে। নইলে চকবাজারের মতো আরেকটা ট্র্যাজেডি হয়ে যেত আজ।’

আরও পড়ুন- কামরাঙ্গীরচরে হেলে পড়েছে ৫ তলা ভবন, নিরাপদে বাসিন্দারা

কথাগুলো বলছিলেন কামরাঙ্গীরচরের ঠিকাদার ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান কবির। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে সেখানকার দক্ষিণ রসূলেরপুর কাজীর গলিতে একটি পাঁচ তলা ভবন হেলে পড়ে। তার সামনে দাঁড়িয়েই এসব কথা বলেন মোস্তাফিজুর রহমান কবির।

জানা যায়, ভবন হেলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভবনের বাসিন্দারা দ্রুত ভবন থেকে বেরিয়ে যেতে থাকেন। পরে স্থানীয়রা এ খবর ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তারা এসে ভবন থেকে বাকি মানুষ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।

এদিকে, ভবন হেলে পড়ার খবর চাউর হতেই স্থানীয়রা হাজির হতে থাকেন ঘটনাস্থলে। তারা বলছিলেন, ভবনটি ভেঙে পড়লে তা চকবাজারের মতোই আরেকটি ট্র্যাজেডির জন্ম দিত।

স্থানীয়দের ওই ভিড়ে ছিলেন ঠিকাদার কবির। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ বিল্ডিং তো পাঁচ তলার উপযোগীই না। ফাউন্ডেশন তো তিন তলার। রড-সিমেন্টও কম। টাকার লোভে বাড়ির আগের মালিক শাহীন এই কাজ করেছে। মাস তিনেক আগে এক কোটি ৫ লাখ টাকায় বাড়িটি আব্দুস সামাদের কাছে বিক্রি করেছে। কিন্তু বাড়ি বানানোর সময় রাজউকের অনুমতি তো দূরের কথা, ইউনিয়ন পরিষদেরও কোনো অনুমোদন নেয়নি। তাই আজকে এ অবস্থা।’

ওই ভবনের পাশের ভবনে একটি ছোট পোশাক কারখানা চালান মাসুম। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, সকাল সাড়ে ১১টা কি ১২টা হবে, হঠাৎ বিকট শব্দ। ভাবলাম গার্মেন্টের কোনো মেশিন ভাঙছে। পরে বাইরে তাকিয়ে দেখি বিল্ডিং হেলে যাচ্ছে। দ্রুত বাইরে গিয়ে ওই বাসার লোকজনকে ডেকে বের করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খবর দেই। তারপর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ও পুলিশ এসে লোকজনকে সরিয়ে বিল্ডিংটা সিজ করছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আল্লাহ বাঁচাইছে ভাই। না হলে আরেকটা বড় ট্র্যাজেডি হয়ে যেত।

কামরাঙ্গীরচর থানা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন আহমেদ মাহিন বলেন, অনুমোদনহীন এসব ভবন দ্রুত সরিয়ে নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে হয়তো আরও ভয়াবহ বিপদ ঘটে যেতে পারে। এবার তো আল্লাহ রক্ষা করছে। তাই এটা শিক্ষা হিসেবে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত রাজউকের।

ঘটনাস্থলে কাজ করছিলেন ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার এরশাদুল হক। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমরা খবর পাই। দ্রুত হাজারীবাগ থেকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ভবনের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। এখন ভবনটির কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা যেন ক্ষতির শিকার না হন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সেখানে ফায়ারের কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।

জানতে চাইলে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন ফকির সারাবাংলাকে বলেন, বাড়িটি তিন মাস আগে শাহিন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে আব্দুস সামাদ নামের এক ব্যক্তি কিনেছিলেন। তিনি ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। বাকি তলাগুলো ভাড়া দিয়েছেন। তবে ভবনটির কাগজপত্র নেই— এ বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না।

ওসি আরও বলেন, ভবনটি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন এটি ভেঙে ফেলা হবে। সেজন্য রাজউকের কর্মকর্তাদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এখনও এসে পৌঁছাননি। ভবনটি নির্মাণের জন্য অনুমোদিত কোনো সংস্থার বৈধ কাগজপত্র নেই বলে জানান ওসি শাহিন ফকির।

সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর

৫ তলা ভবন কামরাঙ্গীরচর হেলে পড়া ভবন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর