উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টাকারীর ময়নাতদন্ত শেষ
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:৩৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: উড়োজাহাজ ছিনতাই করতে গিয়ে কমান্ডো অভিযানে নিহত ব্যক্তির মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মরদেহটি এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের হিমঘরে রাখা হয়েছে। অভিভাবক বা স্বজনদের কেউ গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করলে যাচাইবাছাই শেষে সেটা হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও এখনও মামলা দায়ের হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) জাহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযানের পর গতকাল (রোববার) রাতে আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা প্রথমে সুরতহাল সম্পন্ন করি। সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে- লাশের নাভির উপরে ডানপাশে গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিহ্ন আছে। এছাড়া শরীরে আর কোথাও আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই।’
নগরীর পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা লাশের সুরতহাল করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিলাম। ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। যেহেতু লাশের কোনো মালিক পাওয়া যায়নি বা দাবিদার কেউ আসেনি, সেজন্য এটা হিমঘরে রেখেছি। যদি লাশের দাবিদার আসে, যাচাইবাছাই সাপেক্ষে লাশটা তাদের কাছে হস্তান্তর করব।’
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়ায় সেখানে কী লেখা আছে তা জানাতে পারেননি ওসি।
এদিকে অভিযানের পর জানানো হয়েছিল, বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তির নাম মাহাদি। বয়স ২৬-২৭ বছর।
তবে সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম মো. পলাশ আহমেদ। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের দুধঘাটা এলাকার পিয়ার জাহান সরদারের ছেলে পলাশ।
ওসি উৎপল বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, আশা করি, অভিভাবক কিংবা আত্মীয়স্বজন কেউ চট্টগ্রামে এসে লাশ শনাক্ত করবেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম-ঠিকানা পাওয়ার পর পতেঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিম নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে সোমবার দুপুরে রওনা দিয়েছে। নিহত পলাশের অভিভাক ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে তাদের চট্টগ্রামে ফেরার কথা রয়েছে।
মামলার বিষয়ে ওসি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছিলেন, দুপুরে তারা মামলার এজাহার নিয়ে আসবেন। কিন্তু দুপুরে আবারও জানানো হয়েছে, তারা রাতে আসবেন। মামলা দায়ের হওয়ার পর আমরা তদন্তসহ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
নিহত ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র বা জব্দ করা অন্য কোনো আলামত পুলিশের কাছে এখনও হস্তান্তর করা হয়নি বলেও জানিয়েছেন ওসি।
রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ (বোয়িং-৭৩৭) ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাবার কথা ছিল। বিকেলে ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। এসময় দু’জন কেবিন ক্রুকে জিম্মি করে রাখার কথাও বলা হয়।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তখন পাইলট-যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে নেওয়া হয়। শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার মধ্যে সন্ধ্যার দিকে মাত্র আট মিনিটের কমান্ডো অভিযানে ছিনতাই কাণ্ডের অবসান ঘটে। সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে জানান, অভিযানে ছিনতাইকারী নিহত হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন