‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৪ জনের মৃত্যু, তুলে নেওয়ার অভিযোগ পরিবারের
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:৫৫
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
মোংলা: মোংলার পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জোংড়া এলাকায় র্যাব-৮ ও বনদস্যু আলিম ওরফে আরিফ বাহিনীর মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বাহিনী প্রধান আরিফসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বনের জোংড়া খালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত চারজনের বাড়ী বাগেরহাটের মংলা উপজেলার সিগনাল টাওয়ার এলাকার দক্ষিণ চরে। নিহতরা হলেন-আবদুল আউয়ালের ছেলে আবদুল আলিম ওরফে আরিফ (২৫), আফজাল হাওলাদারের ছেলে রাজু (২২), আলতাফ হাওলাদারের ছেলে সোহেল (৩০) ও রুবেল (২৫)।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক আতিকা ইসলাম জানান, বনদস্যু আলিম ওরফে আরিফ বাহিনীর সদস্যরা বনের জোংড়া খালে অবস্থান করছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতের সোমবার দুপুরে ওই এলাকায় অভিযান চালান র্যাব সদস্যরা। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দস্যুরা গুলি ছুঁড়তে থাকলে আত্মরক্ষায় র্যাবও গুলি চালায়। এক পর্যায়ে দস্যুরা বনের গহীনে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চারজনকে পড়ে থাকতে দেখে তাদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতদের দ্রুত খুলনার দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতদের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য দাকোপ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তবে নিহত রাজু ও আলিমের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করছেন যে রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতেই তাদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত রাজুর মা ফাতেমা বেগম ও বাবা আফজাল হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলে জাহাজে চাকরি করে। জাহাজ থেকে এসে রোববার রাতে ঘরে ঘুমাচ্ছিল, তখন তাকে কে বা কারা ধরে নিয়ে যায়। এখন শুনি রাজু ক্রয়ফায়ারে মারা গেছে।’
আলিমের ভাবী পলি বেগম বলেন, ‘রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঘরে ঢুকে আলিমকে ধরে মুখ বেঁধে নিয়ে যায়। এ সময় আমরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করলে তারা চারটি গুলি ছুঁড়ে তাকে টানতে টানতে নিয়ে ট্রলারে তুলে ঢাংমারীর (সুন্দরবন) দিকে চলে যায়।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ নভেম্বর বাগেরহাটের শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে সর্বশেষ ছয়টি বনদস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালের ৩১ মে মোংলা বন্দরের ইঞ্জিনিয়ারিং জেটিতে বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮জন সদস্য আত্মসমর্পণ করে। এরপর সম্প্রতি সুন্দরবনে আবারো দস্যুদের তৎপরতা শুরু হওয়ার খবরে র্যাব সদস্যরা সোমবার সুন্দরবনে অভিযানে নামলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
সারাবাংলা/এসএমএন