Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনি প্রচারণা


২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:২৫

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তাই আজ (মঙ্গলবার রাত ১২টা) মধ্যরাত থেকে শেষ হচ্ছে সব ধরনের নির্বাচনি প্রচারণা। অর্থ্যাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে আগামী ২ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় সব ধরনের প্রচারণা ও সভা সমাবেশ নিযিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, এদিন মধ্যরাতের আগেই সব ধরনের বহিরাগতকে নির্বাচনি এলাকা ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে ইসি সচিব মোঃ হেলালুদ্দীন আহমেদ সারাবাংলা ডটনেটকে বলেন, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ইসির পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার সবই করা হয়েছে। নির্বাচনে যে কোন ধরনের সহিংসতা ও অনিয়ম বন্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা: মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনি এলাকায় কমিশনের অনুমোদিত স্টিকার বিহীন মটর সাইকেল চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও ২৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে, প্রধান সড়কে (হাইওয়ে) গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও ডাক বিভাগের গাড়ি এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে। ভোটের দিন নির্বাচনি এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে।

বিজ্ঞাপন

মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ: মঙ্গলবার সকাল থেকে দুই সিটিতে টহল শুরু করেছে ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আইনশূঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবি কোষ্ট গার্ড ও র‌্যাব দায়িত্ব পালন করবে। ডিএনসিসিতে ২৫ প্লাটুন বিজিবি এবং ডিএসসিসিতে ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে। এছাড়াও, দুই সিটির মধ্যে ডিএনসিসিতে চার প্লাটুন এবং ডিএসসিসিতে তিন প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে।

প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা: দুই সিটির প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৩ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ৪ জন অস্ত্রধারী পুলিশ, ৩ জন অস্ত্রধারী আনসার এবং ১২ জন আনসার সদস্য থাকবে লাঠি হাতে। অন্যদিকে, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৩ জনের মধ্যে ৬ জন অস্ত্রধারী পুলিশ, ৫ জন অস্ত্রধারী আনসার এবং ১২ জন আনসার সদস্য থাকবে লাঠি হাতে অবস্থান করবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সেও সদস্যরা ভোটের দুইদিন আগে, ভোটের দিন এবং ভোটের পরের দিনসহ মোট চার দিন মাঠে থাকছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র‌্যাব, পুলিশ ও কয়েক প্ল্যাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে।

মেয়র পদে উপ-নির্বাচন ও কাউন্সিলর পদে সাধারণ নির্বাচন: ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৮টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়াও, ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি উভয় সিটিতে ৬টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে, মেয়র ও কাউন্সিলর উভয় পদের মেয়র হবে এক বছরের চেয়ে কিছু বেশি।

দুই সিটিতে কাউন্সিলর প্রার্থির সংখ্যা: ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচনে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিল পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩০৯ জন। দুই সিটিতে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৭০ জন। এর মধ্যে ডিএনসিসির ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১৬০ জন, সমসংখ্যাক ওয়ার্ডে ডিএসসিসিতে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৯ জন। অন্যদিকে ডিএনসিসি‘র ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৫ জন এবং ডিএসসিসিতে ২৫ জন। কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না।

ডিএনসিসিতে মেয়র পদে প্রার্থী: ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এরা হলেন, আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) থেকে শাহিন খান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নর্থ সাউথ প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিম। মেয়র পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আড়াই বছর পর ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক লন্ডনে মারা যান। এতে করে আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে। অন্যদিকে দুই সিটিতে ২০১৭ সালে ১৮টি করে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্ধারিত সময়ের এক বছর পর গত ২২ জানুয়ারি দুই সিটির তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসি মেয়র ও দুই সিটির ১৮ টি করে ৩৬টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর