সাইবার ক্রাইম মোকাবিলার জন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: আইনমন্ত্রী
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৪১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: পুরো দেশের বিচার বিভাগ পর্যায়ক্রমে ই-জুডিশিয়ারির সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির অপরাধ ঠেকানো ও সাইবার ক্রাইম মোকাবিলা করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।’ মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের সলিসিটর ভবনে ই-ফাইলিং সেবা কার্যাক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজ প্রযুক্তির সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয় ও সলিসিটর সংযুক্ত হলো। এই প্রযুক্তির সঙ্গে যদি আমরা সংযুক্ত না হতাম, তাহলে কিন্তু পিছিয়ে থাকতাম। পিছিয়ে থাকলে বিচারপ্রার্থীদের কাছে দ্রুত বিচার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হতো না। সুষ্ঠু বিচার যদি আমরা পৌঁছে দিতে না পারি, তাহলে সেটা হবে বিচার বিভাগের ব্যর্থতা। আর এতে জনগণ বিচার বিভাগের কাছে আসবে না। ‘
আইন মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের ওপর ন্যায়বিচার নির্ভর করে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘ই-জুডিশিয়ারির একটা ধাপ ‘ই-ফাইলিং’ চালু হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় খুব ধীর গতিতে এই প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে এই কারণে যে, আইনের বিষয়গুলো সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে পারবো কি না, সেটা আগে আমাদের শিখতে হবে। আমাদের হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এগুচ্ছি।’
প্রযুক্তির কিছু বিড়ম্বনাও আছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সেই কারণে আমাদের সতর্কতার সঙ্গে এগুতে হবে। ‘ একমাসের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ও সলিসিটর অফিস সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানান।
এর আগে আইনমন্ত্রী ই-ফাইলিং পদ্ধতি উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যবহারে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। বিচার বিভাগেও দুর্নীতি আছে। এটা সাংবাদিকরা ও বিভিন্ন এনজিও বলে থাকে। আমিও বলি। দুর্নীতির রোগ আছে, এটা লুকিয়ে লাভ নেই। এই দুর্নীতির রোগ কিভাবে মুক্তি পাবে, সেই চেষ্টা করতে হবে। আজকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সেটা হলো এই রোগমুক্তির প্রাথমিক পদক্ষেপ।’ তিনি বলেন, ‘এই প্রযুক্তির ফলে ফাইল লুকিয়ে রাখা, ফাইল গায়েব করার হাত থেকে আমরা হয়তো মুক্তি পাবো। আরেকটা জিনিস হলো জবাবদিহিতা। কার কাছে ফাইলটা গেলো, কে কী কাজ করলেন, এটাও ভবিষ্যতে দেখা হবে। এই যে প্রযুক্তির যুগে আমরা প্রবেশ করেছি, এটা সম্ভব হয়েছে এই সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির জন্য।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে এটি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসসহ অন্যান্য জুডিশিয়াল অফিসেও চালু হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, প্রতারণা করে অনেকেই জামিন নিয়ে যায়। হাইকোর্টে জজ সাহেবরা স্বাক্ষর করেন নাই অথচ তার সার্টিফাইট কপি দেখিয়ে জামিন নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে যদি সবখানে ই-ফাইলিং পদ্ধতি চালু হয়ে যায়, তাহলে জালিয়াতি করতে পারবে না। এরফলে গণতান্ত্রিক হবে আমাদের বিচার বিভাগ। অনেক স্বচ্ছতা আসবে।’
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসসহ সলিসিটর ভবনটি সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত আনার জন্য আইনমন্ত্রীকে অনুরোধ করে অ্যাটর্নি জেনারেল।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমাণের লক্ষ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সলিসিটর জেসমিন আরা, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিবসহ অনেকেই।
সারাবাংলা/ এজেডকে/এমএনএইচ