বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারীর কাছ থেকে উদ্ধার করা ‘খেলনা পিস্তল’ জমা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:০৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী যুবকের কাছ থেকে উদ্ধার করা একটি পিস্তল ও কিছু বিস্ফোরক সদৃশ বস্তু এ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পিস্তলটি খেলনার বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একাধিক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ কেউ এই বিষয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি।
মামলাটি তদন্ত করছেন সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া। মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তার কাছে ‘খেলনা পিস্তল’ ও বিস্ফোরকসদৃশ বস্তুসহ বেশকিছু আলামত জমা দেওয়া হয়েছে। র্যাব ও সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে এসব আলামত হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সিএমপি ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে।
‘পটকা ফাটিয়ে’ উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা!
সিএমপি কমিশনার মো.মাহাবুবর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।
খেলনা পিস্তল ও বিস্ফোরক সদৃশ বস্তুর বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি কোনো জবাব দেননি সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পর যেসব আলামত উদ্ধার হয়েছিল, সেগুলো আমরা পেয়েছি।’
বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী কমান্ডো অভিযানে নিহতের পর ঘটনাস্থল থেকে ফিরে সিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, খেলনা পিস্তল ছিল ছিনতাইকারীর হাতে।
তবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তদন্তের আগে পিস্তলটি খেলনা কি-না, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
৪ মাস আগে তালাক দিয়েছি পলাশকে, এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সিমলা
এই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া মঙ্গলবার থেকে তদন্ত শুরু করেন। তিনি প্রথমে মামলার মূল আলামত হিসেবে বিমানটি জব্দ করে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সরওয়ার ই আলমের জিম্মায় দেন। এছাড়া র্যাব এবং সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিমের কাছে থাকা বাকি আলামত উদ্ধারের জন্য চিঠি দেন।
এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বাকি আলামত আসে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে, রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ (বোয়িং-৭৩৭) ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। বিকেলে ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। এসময় দু’জন কেবিন ক্রুকে জিম্মি করে রাখার কথাও বলা হয়।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তখন পাইলট-যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে নেওয়া হয়। শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার মধ্যে সন্ধ্যার দিকে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে ছিনতাই কাণ্ডের অবসান ঘটে।
সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে জানান, অভিযানে ছিনতাইচেষ্টাকারী নিহত হয়েছে।
৮ মিনিটেই ‘পরাভূত’ উড়োজাহাজ ছিনতাইকারী
এই ঘটনায় সিভিল এভিয়েশনের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রযুক্তি সহকারি দেবব্রত সরকার বাদি হয়ে সোমবার রাতে পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০১২-এর ৬ ধারা এবং বিমান নিরাপত্তাবিরোধী অপরাধ দমন আইন, ১৯৯৭-এর ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় দায়ের হওয়া মামলায় নিহত যুবক পলাশ আহমেদ ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর পলাশ দু’টি পটকার বিস্ফোরণ ঘটায়।
এদিকে নিহত পলাশের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার (২৫ ফ্রেবুয়ারি) রাতেই তার বাবা পিয়ার জাহান সরদারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নারায়ণগঞ্জে তাকে দাফনও করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন