Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাত পোহালেই দুই সিটিতে ভোট


২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:৩১

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: রাত পোহালেই ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এদিন (বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।  ইতোমধ্যে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

দুই সিটির মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপ-নির্বাচন এবং নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন। অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) সম্প্রসারিত ১৮ ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দুই সিটিতে মোট প্রার্থী সংখ্যা

ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থী ৩৮২ জন। এরমধ্যে মেয়র পদে ৪ জন। দুই সিটিতে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩১০ জন। উত্তর দক্ষিণ সিটিতে ৬টি করে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৬৯ জন। এরমধ্যে ডিএনসিসির ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১৬ জন, সমসংখ্যাক ওয়ার্ডে ডিএসসিসিতে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১২৫জন।

আরও পড়ুন: ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে সরকারবিরোধীদের আগ্রহে ভাটা

অন্যদিকে ডিএনসিসি‘র ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৫ জন এবং ডিএসসিসিতে ২৪ জন। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও কাউন্সিলর পদে দলীয় স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

ডিএনসিসিতে মেয়র পদে প্রার্থী

ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন, ‘নৌকা’ প্রতীকে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম; ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে জাতীয় পার্টি থেকে শাফিন আহমেদ, ‘বাঘ’ প্রতীক নিয়ে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) থেকে শাহিন খান, ‘আম’ প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান এবং ‘টেবিল ঘড়ি’ নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নর্থ সাউথ প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিম নির্বাচন করছেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র নির্বাচনে ভোটার ও কেন্দ্র

ঢাকা উত্তর সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি, মোট ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ২৯৫টি এবং ভোটকক্ষ ৬ হাজার ৪৮২টি।  এতে মোট ভোটার ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন।  এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩০ জন এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ৭২ হাজার ৯১ জন। মেয়র পদে পুরো উত্তর সিটিতে নির্বাচন হচ্ছে। আর সাধারণ ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে ও সংক্ষিত ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টিতে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হচ্ছে।

উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে কাউন্সিলর পদে ভোটার ও কেন্দ্র

ঢাকা উত্তর সিটির সম্প্রসারিত ১৮ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ৬ ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্র ২৪৩টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৪৭২টি। মোট ভোটার ৫ লাখ ৯০ হাজার ৭০৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৫ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৯২ হাজার ৪২০ জন।

অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাধারণ ১৮টি ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ৬টি ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্র ২৩৫টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ২৫২টি।  মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৯৭ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ২৩৮ জন।

যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন উপলক্ষে ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ১ মার্চ সকাল ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও ডাক বিভাগের গাড়ি এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে।

মোবাইল টিম ও স্টাইকিং ফোর্স নিয়োগ

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুই সিটিতে টহল শুরু করেছেন ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবি কোস্ট গার্ড ও র‌্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। ডিএনসিসিতে ২৫ প্লাটুন বিজিবি এবং ডিএসসিসিতে ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে।

এছাড়া দুই সিটির মধ্যে ডিএনিসিসিতে চার প্লাটুন এবং ডিএসসিসিতে তিন প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা

দুই সিটির প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৩ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এরমধ্যে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ৭ জন অস্ত্রধারী পুলিশ ও আনসার এবং ১২ জন আনসার সদস্য থাকবে লাঠি হাতে।

অন্যদিকে, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৩ জনের মধ্যে ১১ জন অস্ত্রধারী পুলিশ, আনসার ও ১২ জন  আনসার সদস্য থাকবেন লাঠি হাতে।  মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স সদস্যরা ভোটের দুই দিন আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিনসহ মোট চার দিন মাঠে থাকবেন।

স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র‌্যাব, পুলিশ ও কয়েক প্লাটুন বিজিবি রির্জার্ভ ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে।

আরও পড়ুন: মধ্যরাত থেকে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, প্রধান সড়কে শিথিল

এ ব্যাপারে ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ইসির পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, তার সবই করা হয়েছে। নির্বাচনে যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও অনিয়ম বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।নির্বাচনের আড়াই বছর পর ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ডিএনসিসিরি মেয়র আনিসুর হক লন্ডনে মারা যান।  এতে করে আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে, দুই সিটিতে ২০১৭ সালে ১৮টি করে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়।  আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্ধারিত সময়ের একবছর পর গত ২২ জানুয়ারি দুই সিটির তফসিল ঘোষণা করে ইসি।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসি মেয়র ও দুই সিটির ১৮টি করে ৩৬টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সারাবাংলা/জিএস/এমএনএইচ

ঢাকা উত্তর সিটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর