Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বসতিকে দুর্যোগমুক্ত রাখতে কমপ্লায়েন্স কমিশন প্রতিষ্ঠার দাবি


১ মার্চ ২০১৯ ১২:১০

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: আবাসন বা বসতিকে দুর্যোগমুক্ত ও বসবাসযোগ্য করতে ‘কমপ্লায়েন্স কমিশন’ প্রতিষ্ঠাসহ পাঁচ দফা করণীয় পালনের দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, মানবিক বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে কাজ করতে হবে, প্রতিবছরই ভবনের বাসযোগ্যতা নিরূপণ করতে হবে এবং জাতীয় ভবন নির্মাণ কোড সংস্কার করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনসহ (পবা) ২০টি সামাজিক সংগঠন আয়োজিত নাগরিক সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর নিরাপদ বসতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় এই সমাবেশ থেকে।

নাগরিক সমাবেশে মূল বক্তব্য রাখেন বাপা নগরায়ন উপকমিটির সদস্য সচিব স্থপতি ইকবাল হাবিব। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এর আগে ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীকে ভয়াবহ আগুনের ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই সময়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল খান চৌধুরীর নেতৃত্বে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ১৭ দফা সুপারিশ দিয়েছিল, যা সরকার গ্রহণও করেছিল। এর মধ্যে ছয়টিতেই ছিল আবাসিক এলাকা থেকে দাহ্য বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত ২৯টি দ্রব্যের আমদানি, মজুত ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক জঞ্জাল দূর করা ও ফায়ার হাইড্রোজ স্থাপনের সুপারিশও করা হয়েছিল ওই সময়। কিন্তু গত ৯ বছরেও এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে চরম অবজ্ঞা, অবহেলা ও নিষ্ক্রিয়তার মাধ্যমে পুরো জনপদকে ভয়াবহ দুর্যোগের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ইকবাল হাবিব বলেন, প্রতিবছর নিমতলী দিবসে এ সংক্রান্ত আলোচনা, মানববন্ধন ও অন্যান্য কর্মসূচি থাকলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, বিস্ফোরক অধিদফতর, শিল্প মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা নির্বিকার ভূমিকা পালন করে। ফলে ২০১৪ সালের মধ্যে বিসিকের অধীনে বিশেষ শিল্পাঞ্চল তৈরির মাধ্যমে দাহ্য বা রাসায়নিক বস্তুর মজুত ও ব্যবহার আবাসিক এলাকা থেকে অপসারণের কার্যক্রম বেস্তে যায়। এর মধ্যে নিমতলীর ভয়াবহ আগুন দুর্ঘটনার পর গণআন্দোলনের মুখে সরে যাওয়া অবৈধ মজুতদার ও ব্যবসায়ী ফিরে এসে এই জনপদকে আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। রাজনৈতিক অভিভাবকত্বের অভাবে ড্যাপের আওতায় কিছু নগর পরিকল্পনা করা হলেও সেগুলোও অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ পরিস্থিতিতে নাগরিক সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা করণীয় তুলে ধরেন ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর গৃহীত ১৭টি সুপারিশ অবিলম্বের বাস্তবায়নের পাশাপাশি অন্যান্য সব সম্ভাব্য বিপদ চিহ্নিত করে নগরীর আবাসন দুর্যোগ মোকাবিলায় উদ্যোগ নিতে হবে। মানবিক বাসযোগ্যতা উন্নয়নে যথাযথ ব্যক্তিদের মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। জনসম্পৃক্ত ও রাজনৈতিক অভিভাবকত্বের শক্তিতে দুর্যোগমুক্ত নগরায়ন নিশ্চিত করতে গণআন্দোলতে দলমত নির্বিশেষে উদ্যোগ নিতে হবে। ‘কমপ্লায়েন্স কমিশন’ গঠন করে প্রতিটি আবাসন বা বসতিকে দুর্যোগমুক্ত ও বাসযোগ্য করার উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রতিবছর এই কমিশনের কাছ থেকে দুর্যোগমুক্ত আবাসনের বাসযোগ্যতা নবায়ন করতে হবে। এছাড়া, অবিলম্বে বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোডের সংশোধিত সংস্করণ প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘটিয়ে তার জরুরি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

নাগরিক সমাবেশে বাপা ছাড়াও গ্রিন ভয়েস, ডাব্লিউবি ট্রাস্ট, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, নাগরিক উদ্যোগ, সুন্দর জীবন, ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভ, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, ক্লিন রিভার বাংলাদেশ, পুরাতন ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, আদি ঢাকাবাসী ফোরাম, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামসহ ২০টি সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়।

ছবি: সুমিত আহমেদ

সারাবাংলা/টিআর

চুড়িহাট্টায় আগুন নাগরিক সমাবেশ নিমতলীতে আগুন দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর