আর বাড়ি বাড়ি বই নিয়ে যাবেন না পলান সরকার
১ মার্চ ২০১৯ ১৪:৫৫
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
রাজশাহী: মানুষের হাতে হাতে বই পৌঁছানোর মাধ্যমে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতেন যিনি, নিভে গেল তারই জীবনের আলো। বার্ধক্যের সঙ্গে লড়াই করতে করতে শেষ পর্যন্ত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বইয়ের মাধ্যমে সমাজকে আলোকিত করার কারিগরের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদক পাওয়া পলান সরকার।
শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ছেলে হায়দার আলী জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে পলান সরকারের। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
পলান সরকারের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২ মার্চ) সকালে বাঘার হারুন অর রশীদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।
বইপ্রেমী পলান সরকারের জন্ম ১৯২১ সালে। তার নাম হারেজ উদ্দিন। তবে পলান সরকার নামেই সারাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত তিনি। স্থানীয় মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই উপহার দেওয়ার মাধ্যমে তিনি শুরু করেছিলেন আলোর পথযাত্রা। পরে তার এই যাত্রাপথ বিস্তৃত হয় গোটা এলাকাতেই।
বয়সের ভারে নুইয়ে পড়লেও গ্রামে গ্রামে ঘুরে ছোট-বড় সবার হাতে বই পৌঁছে দিতেন পলান সরকার। এলাকায় মানুষের মধ্যে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি করেন তিনি। নিজের টাকায় বই কিনে পাঠকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আবার তা ফিরিয়ে নিতেন। দিতেন নতুন আরও একটি বই।
পাঠের অভ্যাসকে ছড়িয়ে দিতে তার এই অধ্যাবসায় নিয়ে জাতীয় দৈনিকগুলোতে ছাপা হয় বিশেষ প্রতিবেদন। পরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে তিনি স্থাপন করেন পলান সরকার পাঠশালা। তার এই কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১১ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার। তাকে নিয়ে ‘সায়াহ্নে সূর্যোদয়’ নামে একটি নাটকও তৈরি হয়েছে।
সারাবাংলা/টিআর