২০৩০ সালে আইটি সেক্টরে ২০ লাখ দক্ষ জনবল প্রয়োজন হবে
২ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪৭
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে যে কোনো প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করে দক্ষ কর্মীর ওপর। মুনাফা বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে যুগোপযোগী মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে, এ কারণে ২০৩০ সালে আইটি সেক্টরে ২০ লাখ দক্ষ জনবল প্রয়োজন হবে। অধিক বিনিয়োগ করেও দক্ষ কর্মী নিয়োগ না করলে সুফল আসবে না। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করতে প্রয়োজন গুণগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ।
শুক্রবার (১ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীতে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপকদের সংগঠন ইন্সটিটিউট অব পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট (আইপিএম) আয়োজিত এইচআর সামিটে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় আইপিএম আয়োজিত এইচআর সামিট। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, দক্ষ মানব শক্তি ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে, এ কারণে ২০৩০ সালে আইটি সেক্টরে ২০ লাখ দক্ষ জনবল প্রয়োজন হবে। এ কারণে সরকার তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণে নানা ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেসব প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে দক্ষতা অর্জন করে অনেকেই দেশে বিদেশের সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও চায় দক্ষ জনশক্তি। ফলে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রয়োজন বেসরকারি উদ্যোগ। আইপিএম এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
দেশব্যাপী দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে আইপিএমকে হাইটেক পার্ক অথরিটির মাধ্যমে সহায়তার আশ্বাস দেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম।
আইপিএম’র কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট আনোয়ারুল আজিম। তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে যখন আইপিএম গঠিত হয়, তখন এদেশে প্রশাসন বা কর্মী ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত পেশজীবিদের কোন প্ল্যাটফর্ম ছিলো না। আইপিএম প্রথম পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টরে এইচআর প্রফেশনালদের নিয়ে কাজ শুরু করে। আইপিএম বিভিন্ন মেয়াদী কোর্স পরিচালনা করছে। দীর্ঘ ৩৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের রয়েছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কার্যকর এফিলিয়েশন। আইপিএম যুক্তরাজ্যের চার্টার্ড ইন্সটিটিউট অব পার্নোনেল ডেভলপমেন্ট এর একটি এফিলিয়েটেড প্রতিষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইপিএম’র মহাসচিব শাকিল মেরাজ। তিনি বলেন, দেশে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আইপিএম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশে এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। আর উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে প্রয়োজন দক্ষ মানব সম্পদ। একটি প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালিত হবে তখনই যখন পরিচালনার ভার থাকবে দক্ষ কর্মীর হাতে। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দক্ষতা, প্রেষণা, ব্যবস্থাপনার জন্য মানবসম্পদ বিভাগ জরুরি। যার মাধ্যমে কর্মীদের সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এফবিএইচআরও’র প্রেসিডেন্ট মোশাররফ হোসেন, আইপিএম’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট এবিএম ওসমান গণি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর চৌধুরী মফিজুর রহমান প্রমুখ।
দিনব্যাপী এই সামিটে একাধিক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সেশনে দেশ বিদেশের প্রখ্যাত এইচআর এক্সপার্টরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। প্রথম সেশনে মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন আইসিটি ডিভিশনের এলআইসিটি প্রজেক্টের টেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট মো. আসাদ-উর-রহমান।
কর্মক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী নিয়োগ, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মীর দক্ষতা সর্বোচ্চ ব্যবহারের বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ভারতের ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনারর্স এন্ড স্পিকার্স এর প্রেসিডেন্ট যোগেশ কুমার। ব্যবসায় সাফল্য ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কর্মী ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল থট লিডার ড.ইডি এল হ্যানসন।
দিনব্যাপী এই সামিটের সমাপনী অধিবেশন শুরু হয় বিকেলে ৪টায়। সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন, ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল মোহাম্মদ আবু নাসের, লাইফ ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অরূপ দাশ গুপ্ত, বাংলাদেশ অর্গানাইজেশন ফর লার্নি এন্ড ডেভেলপমেন্টের প্রেসিডেন্ট কাজি এম আহমেদ। সমাপনী অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন আইপিএম’র মহাসচিব শাকিল মেরাজ।
সারাবাংলা/এনএইচ