।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাপান-বাংলাদেশ কোম্পানির নামে একেক সময় একেক কৌশল অবলম্বন করে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে আসছে একটি চক্র। যারা এরইমধ্যে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের কাছ থেকে।
শনিবার (২ মার্চ) সকাল ১১টায় রাজধানীর কারওয়ানবাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।
এর আগে, শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর, দারুস সালাম, উত্তরা ও রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব প্রতারকচক্রের ২২ সদস্যকে আটক করে।
গ্রেফতাররা হলেন ইমরান হাসান (২৭), হুমায়ুন কবির হালিম (৫৭), মো রফিকুল ইসলাম (৪৯) আব্দুল বারী আব্দুল আউয়াল (৪০), শাহাদাত হোসেন (৩০), মো. মিনহাজ (৫৬), কামরুজ্জামান (৪৬), মো. হাবিবুর রহমান (৩৫), সঞ্জিত সাহা (৩৪), মেহেদি হাসান হাবিব (৩১) ইউসুফ (৫৩), মামুনুর রশীদ চৌধুরী (৩৪), মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ওরফে আব্দুল জলিল (৫০), মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান (৩৫), মো. রফিকুল ইসলাম (৬৪), এবং মো. মিজান (৩৫)।
মুফতি মাহমুদ জানান, সুসজ্জিত অফিস ও দামি গাড়ি ভাড়া নিয়ে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির নামে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অফিস খুলত চক্রটি। পরে টার্গেট করা লোকদের কৌশলে অফিসে এনে ভুয়া চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে বিশ্বাস অর্জন করে নিত তারা। তাদের বলা হত এই চুক্তির মাধ্যমে তাদের কোম্পানির উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরে কিছুদিন যাওয়ার পর তাদের কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার করার প্রস্তাব দেয় চক্রটি। প্রস্তাবে ভিকটিমরা রাজি হলে তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা চাইত চক্রের সদস্যরা। পরে নগদ অর্থ হাতে পাওয়ার পর প্রতারকচক্রের সদস্যরা উধাও হয়ে যেত।
তিনি আরও জানান, প্রতারক চক্রটি অন্য সব প্রতারক চক্রের মতো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করত না। তারা প্রতারণাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে একটি সাংগঠনিক কাঠামোর মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করত। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করত। প্রতিটি গ্রুপে পাঁচটি স্তরে তাদের সদস্যরা কাজ করত। স্তরগুলো হল সাব ব্রোকার, ব্রোকার, ম্যানেজার চেয়ারম্যান ও সর্বশেষ কোম্পানির প্রধান বস হিসেবে কাজ করত।
তিনি বলেন, তারা পাঁচটি কৌশল অবলম্বন করে এই প্রতারণা করে আসছিল। প্রথমত আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের জমি বা নির্মাণাধীন ভবনের ওপর ইন্টারনেট টাওয়ার স্থাপনের প্রলোভন, এনজিও সেজে বিনা খরচে সোলার প্যানেল স্থাপনের চুক্তি, ইট-পাথর রড সিমেন্ট গার্মেন্টস ঠিকাদারি দেওয়ার কথা বলে এবং অফিসে নিয়ে এসে তাস খেলার ফাঁদে ফেলে ব্যক্তির কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিত চক্রটি।
প্রতারকচক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুফতি মাহমুদ খান।
সারাবাংলা/এসএইচ/একে
প্রতারকচক্র
র্যাব