ঢাবিতে পতাকা উত্তোলন দিবস উদযাপন
২ মার্চ ২০১৯ ১৩:৪৭
।। ঢাবি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐতিহাসিক ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (২ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবন সংলগ্ন বটতলা প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম।
পতাকা উত্তোলন দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, সিনিয়র শিক্ষকরা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক শারমিন জাহান চৌধুরী।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাৎ বরণকারী ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একইসঙ্গে ঐতিহাসিক এই বটতলায় সমবেত হয়ে ১৯৭১ সালের ২ মার্চে তৎকালীন ডাকসুর নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য যেসব ছাত্র নেতারা বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা প্রথম উত্তোলন করেছিলেন তাদের অবদানের কথাও স্মরণ করেন উপাচার্য।
আখতারুজ্জামান বলেন, ‘মার্চ মাস আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গৌরবের মাস। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের সূচনালগ্ন থেকে একের পর এক ঘটতে থাকে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা। এই মার্চ মাস থেকেই বাংলাদেশের সবকিছু পরিচালিত হতে থাকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। তাই নানা কারণে মার্চ মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই মাসটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের জন্য।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হল (বর্তমান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক)-এর ছাত্ররা সে সময় ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন বলে উপাচার্য উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান আশা প্রকাশ করে বলেন, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হবেন তারা অতীতের ন্যায় অসাম্প্রদায়িক ও উদার নৈতিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় রচিত হয়েছে ২ মার্চের বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত প্রথম পতাকা উত্তোলন।
অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ বলেন, ‘১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অকুতোভয় ছাত্রসমাজ ও জনতা ঐতিহাসিক বটতলায় গর্জে ওঠে প্রথম উত্তোলন করেছিলেন বাংলাদেশের পতাকা। তার কিছুদিন পর ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে পাকিস্তানের পতাকার পরিবর্তে সারাদেশে অফিস-আদালত ও ঘরে ঘরে শোভা পায় এ পতাকা। আমাদের এই পতাকার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।’
আলোচনা পর্ব শেষে প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী অনুপ ভট্টাচার্যের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা দেশের গান পরিবেশন করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।
সারাবাংলা/কেকে/একে