নির্বাচনি বিধি মেনে চলতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
২ মার্চ ২০১৯ ১৫:৩৩
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের আচরণবিধি মেনে চলতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, মন্ত্রী ও দলীয় এমপিরা যেন কোনোভাবেই নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন, সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় প্রধান। শনিবার (২ মার্চ) দুপুরে ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন উপজেলা নির্বাচন চলছে। আমাদের যারা দলীয় মন্ত্রী ও এমপি রয়েছেন, তারা নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন। আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়, এমন কোনো কর্মকাণ্ডেও যেন তারা জড়িত না হন। এটা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পরিষ্কার নির্দেশনা।’
এই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশ নির্বাচনে অনেকেরই আশঙ্কা ছিল, কমপিটিশন ওপেন করে দিলে সহিংসতা হবে। কিন্তু একটিও সহিংতার ঘটনা ঘটেনি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ডে যে কাউন্সিলর ইলেকশন হয়েছে, সেখানে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন। তারপরও কোথাও কোনো সংঘাত ঘটেনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমার বিশ্বাস উপজেলা নির্বাচন একেবারেই পারফেক্ট হবে, এটা আমি মনে করি না। পারফেক্ট বিষয়টা ভিন্ন প্রসঙ্গ। কোনো বিষয়কে পারফেক্ট বলা ঠিক না। ভুল-ক্রটি থাকে। ভুল-ক্রটি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাই।’
আরও পড়ুন: উপজেলা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপে একক প্রার্থী ১৮ জন
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইলেকশন করতে করতে, একটা সময় দেখা যাবে গণতন্ত্র ইনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেসি রূপ নিয়েছে। যে কারণে এ ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতির বিষয়গুলো কারও নজরে আসবে না। এ ধরনের ঘটনাগুলোরও পুনরাবৃত্তি হবে না।’
উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহীদের ক্ষেত্রে কোনো দলীয় সিদ্ধান্ত আছে কিন না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিটি করপোরেশনেও ইনিশিয়ালি মনে করেছিলাম, একক প্রার্থী দেবো। কিন্তু সেখানে আমরা ওপেন করে দিয়েছি। আবার উপজেলা নির্বাচনে আমরা ভাইস চেয়ারম্যান পদ ওপেন করে দিয়েছি। নির্বাচনটা জমজমাট হোক। ’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি না চাইলেও তাদের অংশগ্রহণটা কিন্তু গত দু’টি ধাপে বিশেষভাবে লক্ষ করেছি। বিএনপির অনেকেই তাদের মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কাজেই তাদের বারণ তৃণমূলে শোনেনি। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিএনপি না এলে তো নির্বাচন বন্ধ থাকবে না। সংবিধানও বন্ধ থাকবে না। আশা করি ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’
ভোটার উপস্থিতি কম থাকার পরও বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী বিজয়ের কারণ জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মেঘলা ভাব কেটে যাওয়ার পর ভোটার টার্ন আউট বেড়েছে। সকাল বেলা মেঘলা আকাশ বা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিল। এরমধ্যে অনেকে আসতে পারেননি। কিন্তু দুপুরের পর থেকে তারা আসতে শুরু করেছিলেন। এটা তো গণমাধ্যমে আপনারাই রিপোর্ট করেছেন।’
৪র্থ ধাপে আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাদকের মামলা থাকার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গতকাল যে তালিকা প্রকাশ করেছি, প্রত্যাহারের আগে পর্যন্ত চিঠি পরিবর্তন করার একটা সময় আছে। এই সময়সীমা পর্যন্ত আমরা খোঁজখবর নেই। অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখি, তদন্ত করি। সত্যিকার অর্থে অভিযোগ যদি সত্য হয়, তাহলে আমাদের প্রার্থী হিসে তাকেবে বাদ দিয়ে দেই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আমিরুল আলম মিলন, আনোয়ার হোসেনসহ অনেকেই।
সারাবাংলা/এনআর/এমএনএইচ